পশ্চিমা সভ্যতার জন্য আফসোস!
মাহফুয আহমদ
ইউরোপ-আমেরিকা তথা সভ্যতার দাবীদার পশ্চিমা দেশগুলো কোন জাহিলিয়াত ও অসভ্যতার দিকে এগুচ্ছে- সেটা তাদের দেশসমূহের বর্তমান হালচিত্র থেকে দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে যায়। পারিবারিক ব্যবস্থা অনেক আগে থেকেই ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। অবাধ মেলামেশার বৈধতা মানবসমাজে মানুষ আর পশুর আচরণের মধ্যে কোনো ফারাক বাকি রাখেনি। সবরকমের প্রাচুর্য থাকা সত্ত্বেও সর্বত্র আত্মিক অশান্তি, সামাজিক বিশৃঙ্খলা এবং লিঙ্গ বৈষম্য দিনদিন জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলছে। ওসব দেশে নারী স্বাধীনতা এবং সমানাধিকারের কথা খুব জোরেশোরে বলা হলেও প্রকৃতার্থে সেখানকার নারীগণ যৌননির্যাতন এবং আর্থিক ও সামাজিকভাবে বৈষম্যের শিকার।
আজকের এ সংক্ষিপ্ত নিবন্ধে ওইসব দেশের বহুল প্রচারিত কিছু দৈনিক ও প্রচারমাধ্যম থেকে এসংক্রান্ত কতগুলো দৃষ্টান্ত পেশ করা হলো: এক. সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘যদিও ব্রিটিশ নারী ও পুরুষ উভয়পক্ষই ফুলটাইম কাজ (চাকুরী) করে থাকেন তদুপরি ঘরের সকল কাজ একা নারীকেই আঞ্জাম দিতে হয়। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এক তৃতীয়াংশেরও কম পুরুষ তাদের স্ত্রীদেরকে গৃহস্থালি কাজকর্মে সহযোগিতা করে থাকেন!’
তাহলে এটাই কি পশ্চিমাদের নারী স্বাধীনতা ও সমানাধিকার আদায়ের শ্লোগানের আসল রূপ! এটা সমানাধিকার তো দূরের কথা, ন্যায্য অধিকারই নয়। উল্টো নারীর ওপর অতিরিক্ত দায়িত্বভার আরোপ করা। বাইরে চাকুরী, ঘরের কাজ এবং সন্তানাদি লালনপালন! অন্যদিকে বিবিসি এর তথ্যমতে, কর্মক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় নারীগণ স্বল্প বেতনে কাজ করতে হয়; যদিও উভয়ের কাজ, কাজের গুণ ও দায়িত্ব সমানই হয়ে থাকে!
দুই. গত ৫ই ফেব্রুয়ারি পত্রিকার একটি নিউজ পড়ে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম! একেবারে হতবাক! আমেরিকার নর্থ কারোলিনা অঞ্চলের ৪০ বছর বয়সী এক বাবা তার ১৮ বছর বয়সী মেয়েকে বিয়ে (!) করেন। বিয়ের দুবছর পর গত সেপ্টেম্বরে তাদের ঘরে সন্তান জন্ম লাভ করে! সূত্র: ডেইলি মেট্রো, ডেইলি মেইল, ডেইলি সান। আসতাগফিরুল্লাহ! সভ্যতার দাবীদার এই অসভ্যদের থেকে আর কী কী প্রমাণ পেলে আমরা তাদের নোংরামি বোঝতে পারব? নারী স্বাধীনতার নামে নারীদের ইজ্জত লুণ্ঠনকারী এই বেহায়া অমানুষদের থেকে আর কত দৃষ্টান্ত দেখলে আমরা তাদের ভ-ামি উপলব্ধি করতে পারব?
তিন. প্রত্যহ এখানকার দৈনিক পত্রিকাগুলো খুলে সর্বপ্রথম যে পাতাগুলো আমি দেখতে চেষ্টা করি সেগুলো হলো, সম্পাদকীয়- উপসম্পাদকীয় এবং আন্তর্জাতিক খবরাখবর। জরুরি ও উপকারী তথ্য এবং খবরগুলো সংরক্ষণ করে রাখতে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করি।
সভ্যতার দাবিদার ওইসব লোকদের এমন অসভ্য কা-কারখানা সম্পর্কে স্বদেশী পাঠকদের কিছুটা অবগত করার স্বার্থে অনিচ্ছা সত্ত্বেও এই লজ্জাকর মানুষরূপী পশুর মতো আচরণকারী লোকদের খবরগুলোও উল্লেখ করতে বাধ্য হলাম। উল্লেখ্য যে, এসব বিবরণকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে উড়িয়ে দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই; কেননা এ জাতীয় নিউজে এখানকার মিডিয়াগুলো সবসময় ভরপুর থাকে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের মাফ করুন, হেফাজত রাখুন। আমিন।
লেখক: লন্ডন প্রবাসী