আমি কোটা প্রথার সংস্কারের কথা বলছি
মো. ফরহাদ
প্রথমেই বলে রাখা দরকার, আমাদের দেশে যে কোটার প্রচলন আছে, তার বিপক্ষে আমি নই। আমি কোটা প্রথার সংস্কারের কথা বলছি। এটা এক ধরণের বৈষম্য ছাড়া আর কিছুই না। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা কোটাবিহীন যারা আছি, তারা কি অপরাধ করেছি যে আমাদের জন্য মাত্র ৪৪ শতাংশ আসন বরাদ্দ থাকবে? আমরা অবশ্যই চাইবো, এই বৈষম্য দূর করা হোক। গত দুইদিন আগে অগ্রণী ব্যাংকের পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। সেখানে আসন খালি ছিল ২৬৮ টি, কিন্তু লোক নেয়া হয়েছে মাত্র ১৯৭ জন। বাকি ৭০ টি আসন খালি কেন? কারণ, তারা কোটার ভিত্তিতে লোক পায়নি। এখানে যেহেতু কোটা ভিত্তিক লোক পাওয়া যায়নি, সেহেতু খালি আসন গুলোতে আমাদের মেধাবি ছাত্রদের জন্য সুযোগ করে দেয়া হোক। জাতীয় সম্পদগুলো এভাবে নষ্ট করা কোন ভাবেই ঠিক নয়। তাই আমি বলবো, কোটা থাকুক কিন্তু তার সংস্কার করা প্রয়োজন। একটি স্বাভাবিক মাত্রায় কোটা ব্যবস্থা থাকবে। মুক্তিযোদ্ধাদের কোটার কারণে বিশাল সংখ্যক আসন খালি থাকে। যেহেতু তারা তাদের জীবনের অনেক মূল্যাবান একটি অংশ দেশের পিছনে ব্যয় করেছেন, তাই আমরা সবাই তাদেরকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু তাদেরকে দেয়া বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কারণে আমরা তাদেরকে এখন তেমন একটি শ্রদ্ধার জায়গায় রাখতে পারি না। তাদেরকে সুযোগ সুবিধা দেয়া প্রয়োজন কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত নয়। তাদের জন্য অন্যান্য সুযোগ আরো বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু শুধু মেধা যাচাইয়ের স্থানে সুযোগ দেয়াটা আমরা যুক্তিযুক্ত বলে মনে করি না। তাই দেশের ৫৬ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা কমিয়ে এটাকে ২০-৩০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। সেক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের ১৫-২০ শতাংশ দেয়া যেতে পারে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে গিয়ে দেখেন, পরিবারের মাত্র একজন তার কোটা জীবনে একবার ব্যবহার করার সুযোগ পায়। কিন্তু আমাদের দেশে চাকরির পর চাকরিতে ব্যবহার করে আর চাকরী পরিবর্তন করে। এটা মেনে নেয়া অত্যন্ত দূরূহ ব্যাপার। তাই যে আন্দোলন চলছে তার সাথে আমরা একতœতা প্রকাশ করছি।
পরিচিতি : ছাত্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়/মতামত গ্রহণ : শাখাওয়াত উল্লাহ/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ