কৃষকের ১০ টাকার অ্যাকাউন্ট ৯২ লাখ ৩৭ হাজার এক বছরে বেড়েছে ১ লাখ ৯৪ হাজার
জাফর আহমদ: এক বছর কৃষকের ১০ টাকার অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৯৪ হাজার। বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ১৪ শতাংশ। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের হাল নাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ সালে কৃষকের ১০ টাকার অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৯০ লাখ ৮৩ হাজার। ২০১৭ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ লাখ ৩৭ হাজার। তবে ৫০ টাকা ও ১০০ টাকার অ্যাকাউন্ট মিলে সুবিধা প্রাপ্ত বিশেষ এ সব অ্যাকাউন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৩৩ হাজার ২১৭টি।
সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণির বড় অংশই ছিল আর্থিক সেবা খাতের বাইরে। তাদের ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রমের আওতায় কৃষক, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতাভোগী, মুক্তিযোদ্ধা, ক্ষুদ্র জীবনবীমা পলিসি গ্রহীতা, অতিদরিদ্র উপকারভোগী, অতি-দরিদ্র মহিলা উপকারভোগী, ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির সুবিধাভোগী, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুস্থ পুনর্বাসনের অনুদানপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ, ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী, তৈরি পোশাকশিল্পে কর্মরত শ্রমিক, চামড়া ও পাদুকাশিল্প-কারখানায় কর্মরত শ্রমিক, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুস্থ’ পুনর্বাসনের অনুদানপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ, স্কুলের শিক্ষার্থী, কর্মজীবী পথশিশু-কিশোর, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে অনুদানপ্রাপ্ত দুস্থ’ ব্যক্তি, আইলাদুর্গত ব্যক্তি, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীসহ সব প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় হিসাব খোলার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। ন্যূনতম ১০ টাকা, ৫০ টাকা এবং ১০০ টাকা জমা দিয়ে এসব হিসাব খোলার নিয়ম করা হয়। এগুলোয় সর্বনিম্ন জমার বাধ্যবাধকতাও তুলে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, দেশের মোট জনসংখ্যার ১২ দশমিক ৯০ শতাংশ অতিদরিদ্র। গ্রামাঞ্চলে অতিদরিদ্র মানুষের জীবনযাপনে সহায়তা ও আপদকালীন কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মাধ্যমে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এদের দৈনিক ভিত্তিতে ২০০ টাকা মজুরি দেওয়া হয়। এই শ্রেণির ৪৫ লাখ ৮৩ হাজার জনের ব্যাংকে সঞ্চয় ৩৭৭ কোটি টাকা। ১০ টাকার অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া শুরু হয় কৃষকদের মাধ্যমে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে ৯২ লাখ ৩৭ হাজার ৯৯০ জন কৃষক এই হিসাবে জমা রেখেছেন ২৮২ কোটি টাকা।
মুক্তিযোদ্ধাদের অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে ১৮২ কোটি টাকা। তৈরি পোশাকশিল্পের ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯২২ শ্রমিক জমা রেখেছেন ১১৫ কোটি টাকা। ১ লাখ ৬৭ হাজার ২৪৬জন প্রতিবন্ধী ১৮ কোটি জমা করেছেন। এ ছাড়া ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির আওতায় ৩৩ হাজার ১২৭ জন ১০৩ কোটি টাকা, ক্ষুদ্র জীবনবীমা কর্মসূচি গ্রহীতারা ১২ কোটি টাকা, এলএসবিপিসি কারিগররা ২ কোটি ৩ লাখ টাকা, সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ৭০ লাখ টাকা জমা রেখেছেন।
উল্লিখিত মানুষের ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে কাজ করছে সরকারি ৮ ব্যাংক। এগুলো হচ্ছে সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। সম্পাদনা : আনিস রহমান