শিশুর সুন্দর ভবিষ্যত
মুফতি আহমদ আবদুল্লাহ
সামাজিক পরিবেশ এবং রাষ্ট্র যাদের নিয়ে গঠিত তাদের মূল হলো, শিশু। অথচ এই শিশুর জীবন সুসংগঠিত করতে আমরা কতটুকু ভূমিকা রাখছি? আমরা জানি, আজকের শিশু আগামী দিনে জাতীর ভবিষ্যৎ। প্রতিটি শিশু তার নিজস্ব প্রতিভা নিয়ে জন্মায় এবং উপযুক্ত পরিচর্যায় তার সে প্রতিভা ডালপালা ছড়িয়ে সমৃদ্ধ থেকে সমৃদ্ধতর হয়। তাই কবির ভাষায় বলতে হয়, ‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুর অন্তরে’। অন্যদিকে অসুস্থ প্রতিকূল পারিপার্শ্বিক আবহাওয়া শিশুর প্রতিভাকে ধ্বংস করে। পরিবেশগত ভিন্নতার জন্য একই মেধাসম্পন্ন দুটি শিশুর একজন হয় সমাজের বরণীয় বুদ্ধিজীবী, অন্যজন হয় খুনি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী। অনুকূল পরিবেশে শিশুর মেধা ও সৃজনশীলতা ভালোর দিক পরিচালিত হয়। মূলত একটি শিশু সঠিক পরিচালনা ও দিক-নির্দেশনার মাঝে বড় হলে সে হতে পারে একজন গুণী ব্যক্তিত্ব। শিশুর সঠিক বিকাশের লক্ষ্যে তার শারীরিক, মানসিক ও আবেগিক বিকাশের জন্য পরিবারের অভিভাবকদের বিশেষ করে মা-বাবার ভূমিকা প্রধান। শিশুর প্রতিভা সঠিক বিকাশের ক্ষেত্রে তার মানসিকতা, চাহিদা, মেধা, কোনো কিছু গ্রহণ করার ক্ষমতা, ঝোঁক বা প্রবণতার উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।
অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে পড়াশুনার জন্য অতিমাত্রায় চাপ প্রয়োগ করেন। এ চাপ যুগপৎ শারীরিক ও মানসিক হয়ে পড়ে। এ ছাড়া আছে নানা রকম আদেশ নিষেধের দেয়াল। এতে করে শিশুর মাঝে একটা অসহায়বোধ কাজ করে। যা পরবর্তীতে তাকে দুর্বল ও মানসিকতা সম্পন্ন বা ভীতু প্রকৃতির করে তোলে অথবা করে তোলে বিদ্রোহী। কোনোকোনো মধ্যবিত্ত পরিবারে দেখা গেছে, বাচ্চাদের শাসন করার জন্য হাতের কাছে বেত রাখা হয়। রোজ সন্ধ্যেবেলা বাচ্চাদের গৃহশিক্ষকদের পড়তে দিয়ে অভিভাবকরা পড়শীদের বাসায় খোশগল্পে মেতে ওঠেন।
এদিকে গৃহশিক্ষক চলে যাবার পর অভিভাবকরা ফিরে এসে দেখেন, বাচ্চাদের ভেতর মারামারি, হাতাহাতি, দুষ্টুমি, হৈচৈ শুরু হয়ে গেছে ততক্ষণে। অভিভাবকরা নিষ্ঠুরভাবে শাস্তি দিয়ে এই হৈচৈ থামান। ভবিষ্যতে দেখা গেছে, এসব পরিবারের সন্তানরা বিপথগামী হয়েছে, হয়েছে সন্ত্রাসী।