![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)
সাফল্য কি, কোথায় ও অর্জনের উপায়
মুফতী মুজাহিদ সরকার
বিশ্বজুরে সাফল্য প্রেমী মানুষের অভাব নেই। সকলে সাফল্যের প্রতিক্ষায় প্রহর গনে, এর অন্বেষণে জীবন বিপন্ন করে। কুরআন-হাদীসে সাফল্য শব্দটি বহুল ব্যবহৃত। আযান-ইকামতে দৈনিক পাঁচবার প্রত্যেক মুসলমানকে সাফল্যের দিকে আহ্বান করা হয়। এর অর্থ প্রত্যেক মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হওয়া ও সকল কষ্ট দূর হওয়া। (কামূস)
শব্দটি যেমন সংক্ষিপ্ত, তেমনি সুদূরপ্রসারী অর্থবহ। কোন মানুষ এর চাইতে বেশি কোনকিছু কামনাই করতে পারে না। বলাবহুল্য, একটি মনোবাঞ্ছাও অপূর্ণ না থাকা এবং একটি কষ্টও অবশিষ্ট না থাকা-এরূপ পূর্ণাঙ্গ সফলতার ভাগী জগতের কোন মহত্তম ব্যক্তিরো আয়ত্তাধীন নয়। সপ্তরাজ্যের বাদশাহ হোক কিংবা সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল ও পয়গম্বার হোক, জগতে অবাঞ্ছিত কোন কিছুর সম্মুখীন না হওয়া এবং অন্তরে বাসনা জাগ্রত হওয়া মাত্রই তা পূর্ণ হওয়ার ব্যবস্থা কারো জন্য নেই। সবকিছু বাদ দিলেও প্রত্যেক নিয়ামতের অবসান ও ধ্বংসের খটকা এবং যে কোন বিপদের সম্মুখীনতার আশঙ্কা থেকে কেউ মুক্ত নয়।
এ থেকে জ্ঞাত হল পূর্ণাঙ্গ সফলতা দুনিয়াতে অর্জিতই হতে পারে না। কেননা দুনিয়া কষ্ট ও শ্রমের আবাস্থল এবং এর কোন বস্তুর স্থায়িত্ব নেই। এ অমূল্য সম্পদ অন্য জগতে পাওয়া যায়, যার নাম জান্নাত। সেখানেই মানুষের প্রত্যেক মনোবাঞ্ছা সর্বক্ষণ বিনা প্রতীক্ষায় অর্জিত হবে। আল্লাহ পাক বলেন: “তারা যা চাইবে, তাই পাবে”। (কুরআন)
সেখানে নূন্যতম ব্যাথা-কষ্ট অনুভব হবে না এবং প্রত্যেকেই একথা বলতে বলতে সেখানে প্রবেশ করবে: “সমস্ত প্রসংশা আল্লাহর যিনি আমাদের থেকে কষ্ট দূর করেছেন এবং স্বীয় কৃপায় আমাদেরকে এমন স্থানে প্রবিষ্ট করেছেন, যার প্রত্যেক বস্তু সুপ্রতিষ্ঠিত ও চিরন্তর”। (কুরআন)
এই আয়াতও ইঙ্গিতবহ যে, বিশ্বজগতে কিছু না কিছু কষ্ট ও দুখেঃর সম্মুখীন হবে। তাই জান্নাতে পা রাখার সময় প্রত্যেকেই বলবে যে, এখন আমাদের দুঃখ দূর হলো। সাফল্য লাভের ব্যবস্থাপত্রের বর্ণনায় ইরশাদ হয়েছে: “যে নিজেকে পাপকর্ম থেকে পবিত্র রেখেছে সে সাফল্য লাভ করেছে”। (সূরা আ‘লা-১৪)
উক্ত আয়াত ইঙ্গিতবহ যে, পূর্ণাঙ্গ সাফল্য লাভের জায়গা আসলে পরকাল। যে সাফল্য কামনা করে, সে শুধু দুনিয়া নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকবে না। কেননা কুরআনে বলা হয়েছে: “তোমরা দুনিয়াকেই পরকালের উপর অগ্রাধিকার দিয়ে থাক; অথচ পরকাল উত্তম এবং চিরস্থায়ী”। (কুরআন)
পরকালের উত্তমতার কারণ, তাতে প্রত্যেক মনোবাঞ্ছা অর্জিত ও প্রত্যেক কষ্ট দূর হবে। মোটকথা হল, পূর্ণাঙ্গ-স¦য়ংসম্পূর্ণ সাফল্য একমাত্র জান্নাতেই পাওয়া যাবে দুনিয়া এর স্থানই নয়। তবে অধিকাংশ অবস্থার হিসেবে সফলকাম হওয়া ও কষ্ট থেকে মুক্তি লাভ করা-এটাও দুনিয়াতে আল্লাহপাক বান্দাদেরকে দিয়ে থাকেন। আলোচ্য আয়াতগুলোতে আল্লাহপাক তাদেরকে সাফল্য দান করার ওয়াদা দিয়েছেন, যারা আয়াতে উল্লেখিত সাতটি গুণে গুণান্বিত। পরকালের সাফল্য ও দুনিয়ার সম্ভব্য সাফল্য সবই এই ওয়াদার অন্তর্ভূক্ত। গুণগুলো নি¤œরূপ: নামাযে খুশু, অনর্থক বিষয় থেকে বিরত থাকা, জাকাত প্রদান করা, যৌনাঙ্গকে হারাম থেকে সংযত রাখা, আমানত প্রত্যর্পণ করা, অঙ্গীকার পূর্ণ করা, নামাযে যতœবান হওয়া। সিনিয়র শিক্ষক জামিয়া মাদানিয়া রওজাতুল উলূম কুমিল্লা
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)