রাশিদ রিয়াজ : কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেছেন, তিনি ও তার বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তাদের পিতা রাজীব গান্ধীর হত্যাকারীদের সম্পূর্ণ ক্ষমা করে দিয়েছেন। সিঙ্গাপুরে আইআইএম এ্যালুমিনি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পিতার হত্যাকারীদের ওপর আমাদের ক্ষোভ ছিল। আমরা বছরের পর বছর অস্বস্তিতে ছিলাম। কিন্তু যেভাবে হোক এখন আমরা তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি।পিতার হত্যা আমরা মেনে নিতে পারিনি ? এ হত্যাকা- গভীর প্রভাব ফেলেছে আমাদেও নিতে পারিনি ? এ হত্যাকা- গভীর প্রভাব ফেলেছে আমাদের জীবনে ? দীর্ঘদিন এই বিষয় নিয়ে আমরা মন্তব্য করার মতো অবস্থাতেই ছিলাম না ? রাগ, ক্ষোভে মনের ভিতরটা ফেটে পড়েছিল ? কিন্তু গত কয়েক বছরে সব কিছুকে স্বাভাবিক করে ফেলেছি ? আমি আর প্রিয়াঙ্কা পিতার হত্যাকারীদের একেবারে ক্ষমা করে দিয়েছি ?’
১৯৯১ সালের ২১ মে তামিলনাড়ুতে নির্বাচনী জনসভায় এলটিটিই-র এক মহিলা আত্মঘাতী জঙ্গি রাজীবকে হত্যা করেন। প্রায় ২৭ বছর পরে এই ঘটনা সম্পর্কে মুখ খুললেন রাহুল।এ হত্যাকা-ের সাথে শ্রীলঙ্কার এলটিটিই নেতা প্রভাকরণ জড়িত ছিলেন।
রাহুলের কথায়, ‘এইরকম ঘটনা শক্তি ও সংশয়ের সংঘাতের ফলে ঘটে। এলটিটিই-এর প্রধান প্রভাকরণকে যখন টিভিতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছিলাম, আমার দু’টি অনুভূতি হয়েছিল। প্রথমে মনে হয়েছিল, তাঁকে কেন এভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে? এরপর তাঁর ও তাঁর সন্তানদের জন্য খারাপ লেগেছিল। আমিও তো সদ্য আমার পিতাকে হারিয়েছিলাম ? তাঁর সন্তানের প্রতিও একই রকম মনে হয়েছিল আমার ?’
রাহুল আরও জানান, ‘আমার দাদিকে হত্যা করা হয় ? আমার বাবাকে হত্যা করা হয় ? এখন মনে হয় সারাদিন বডিগার্ড নিয়ে ঘুরলেও কোনও সুবিধা পাওয়া যায় না ! তিনি বলেন, এধরনের হত্যাকা- যখন ঘটে তখন বিভিন্ন মতাদর্শ, ধ্যান-ধারণা ও দলের মধ্যে সংঘর্ষ বিদ্যমান থাকে। এজন্যে আমাদের খেসরত দিতে হয়েছে। আমার মনে পড়ে যখন আমি টেলিভিশনে প্রভাকরণের লাশ দেখেছিলাম, তখন দুই ধরনের অনুভূতি হয়েছিল । কেন তারা তাকে এভাবে মারল। এবং দ্বিতীয়ত নিহত প্রভাকরণের ছেলেমেয়ের কথা ভেবে আমার মনে গভীর সহানুভূতির সৃষ্টি হয়েছিল। তাই যখনি কোনো সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে, তার পেছনে যেই থাকুক, আমার মনে হয় তার পেছনে এক ব্যক্তি আছে, একটি পরিবার আছে, তাদের ছেলেমেয়ের কান্না আছে। এসব কারণে আমি গভীর বেদনা অনুভব করি। আমি ও আমার বোন তাই মানুষকে ঘৃণা করতে পারি না।