‘দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল’
হুমায়ুন কবির খোকন : পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ও দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ পৃথিবীর একটি অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ দেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবে বিশ্বের ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব এদেশের অর্থনীতি ও কৃষিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এ জন্য যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রভাব মোকাবেলায় প্রস্তুত করা হয়েছে। মন্ত্রী গতকাল রবিবার রাজধানীর গুলশানে স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টারে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন সক্ষমতা বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সেন্টার ফর এডভান্সড স্টাডিজ (বিসিএএস) এর ফেলো মো. গোলাম রব্বানী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী সারওয়ার ইমতিয়াজ হাশমী, বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. আতিক রহমান ও সুইডিশ সিডার প্রতিনিধি ইলভা সালসট্রেড।
গবেষণা প্রতিবেদনে দেশের ৮টি দুর্যোগ প্রবন জেলার মানুষের সার্বিক চালচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। দুর্যোগ আক্রান্ত এলাকার ১ হাজার ১৫০টি পরিবারে এই জরিপ চালানো হয়েছে। এসব এলাকার শতকরা ৬৩ ভাগ মানুষ কৃষিজীবী। খাদ্য নিরাপত্তার প্রশ্নে উপকূলীয় এলাকার মানুষ মূলত কমমূল্যের খাদ্যের উপর নির্ভরশীল, তারা বন্ধু স্বজনের কাছ থেকে সহায়তা নেয় এবং তারা ক্ষুদ্র ঋণের উপর নির্ভরশীল। পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, সংসারে এবং সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে নারীর ভূমিকা বিষয়ে গবেষণায় আলোকপাত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাস, লবণাক্ততা, জলাবদ্ধতা, তাপমাত্রার অস্বাভাবিক উঠানামা এবং বৃষ্টিপাত দেশের বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলার উপকূলীয় এলাকাসমূহসহ দক্ষিণ-পশ্চিম ও মধ্য উপকূলীয় এলাকা, গাইবান্ধার চরাঞ্চল এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির মানুষের জীবনযাত্রা ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যে সুপারিশগুলো উঠে এসেছে তা হলো- দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তার ফলাফল কেমন হচ্ছে, তা আবার খতিয়ে দেখতে হবে, যাতে ব্যাপক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর অবস্থা মনিটর করতে হবে। দুর্যোগ চলাকালে এবং পরে গৃহপালিত পশুপাখির জন্য পশু চিকিৎসক রাখতে হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে এবং অডিও ভিজুয়্যাল মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা বাড়াতে হবে। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব হোসেন