জাফর আহমদ : বাংলাদেশ ব্যাংকের কাস্টমার সার্ভিসেস বিভাগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিভিন্ন ব্যাংকের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেছেন সাড়ে ৩ হাজার গ্রাহক। ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্টের বার্ষিক প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। গতকাল রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এ.এন.এম. হামিদুল্লাহ কনফারেন্স হলে গভর্নর ফজলে কবির বার্ষিক প্রতিবেদনটির মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে টেলিফোনে ১ হাজার ৩৬২টি এবং লিখিতভাবে ২ হাজার ১৬৪টি; মোট ৩ হাজার ৫২৬টি অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন ব্যাংকের গ্রাহকরা। এরমধ্যে সাধারণ ব্যাংকিং সংক্রান্ত অভিযোগ ছিল মোট অভিযোগের ৪০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। ঋণ ও অগ্রিম সংক্রান্ত অভিযোগ ১৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। ট্রেড বিল সংক্রান্ত অভিযোগ ১৫ দশমিক ০২, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত ৯ দশমিক ২৩, মোবাইল ব্যাংকিং সংক্রান্ত ২ দশমিক ৪৭, ব্যাংক গ্যারান্টি সংক্রান্ত ২ দশমিক ৩৯, রেমিট্যান্স সংক্রান্ত ১ দশমিক ৮৫ এবং বিবিধ অভিযোগ ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ।
জানা গেছে, শুধু গত বছরের ডিসেম্বর মাসেই বাংলাদেশ ব্যাংকের কাস্টমার সার্ভিসেস বিভাগে (সিএসডি) এ ধরনের প্রায় ৫০০ অভিযোগ এসেছে। মাত্র এক মাসের প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে সব ব্যাংকের শীর্ষে ছিল ফারমার্স ব্যাংক। ব্যাংকটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ৫৭টি গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ ওঠে। এরপরই বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংকে ৪৭টি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে ৩৩টি অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, সিআইপিসি চালুর পর থেকে গত বছর পর্যন্ত এফআইসিএসডিতে অভিযোগ করেছেন ২৫ হাজার ৬৫৬ জন গ্রাহক। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ২৫ হাজার ৬৪৮টি অভিযোগ। অভিযোগ নিষ্পত্তির হার ৯৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এসময় লিখিত অভিযোগের সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৮৬১টি। যার মধ্যে ১৪ হাজার ৮৫৩টিই নিষ্পত্তি হয়েছে। অন্যদিকে, এ সময়ে টেলিফোনে আসা অভিযোগ ছিল ১০ হাজার ৩৯৬টি; যার সবই নিষ্পত্তি হয়েছে। একইসময়ে অনলাইনে প্রাপ্ত ৩৯৯টি অভিযোগই নিষ্পত্তি হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর মাসে প্রাপ্ত অভিযোগের সংখ্যা ছিল ৪৯৫টি। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ৪৮৭টি। নিষ্পত্তির হার ৯৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এসময়ে লিখিতভাবে ১৯৭টি, টেলিফোনে ২৮৯টি ও অনলাইনে ৯টি অভিযোগ আসে। এরমধ্যে অনলাইন ও টেলিফোনে পাওয়া অভিযোগের শতভাগ নিষ্পত্তি হলেও লিখিত অভিযোগের ৮টি নিষ্পত্তি হয়নি।