দেশে খরা মনিটরিং ব্যবস্থা নেই আগাম পূর্বাভাসও দেয়া হয় না
মতিনুজ্জামান মিটু : খরা মনিটরিং এর ব্যবস্থা নেই দেশে, আগাম পূর্বাভাসও দেয়া হয় না। খরার প্রভাবে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুরসহ উত্তরবঙ্গের বিস্তৃর্ণ এলাকার ফসল নষ্ট হয়ে যায়। বিগত ৫০ বছরে দেশে ২০টি খরায় ব্যাপক শস্যহানী হয়েছে। বর্তমানে জলবায়ুর প্রভাবে আগের চাইতে খরার ঝুঁকি অনেক বেড়েছে। প্রতি খরায় বরেন্দ্র অঞ্চলসহ উত্তরবঙ্গে ২০ থেকে ২৫ ভাগ শস্যের ক্ষতি হয়। তীব্র খরায় এই ক্ষতি ৫০ থেকে ৫৪ ভাগে ছাড়িয়ে যায়।
এব্যাপারে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এর সাবেক মহাপরিচালক ড. এম এ সাত্তার বলেন, ২ থেকে ৩ বছর অন্তর দেশের ৮ হাজার ৪ শ’ বর্গকিলোমিটার এলাকা খরা কবলিত হয়। এই এলাকা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। খরা কবলিত এলাকায় তাপমাত্রা ক্ষেত্র বিশেষে ৪০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড অতিক্রম করে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বৃষ্টিপাতও এখানে কম, পানি সমস্যা প্রকট। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বছরে ২০০০ থেকে ৪,৫০০ মিলিমিটার হলেও খরা কবলিত অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭৫০ থেকে ১৪০০ মিলিমিটার। ১৯৮১ সালে ওই অঞ্চলে ১৭৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। প্রতিবেশি ভারত, শ্রীলংকা, চীন ও ভিয়েতনামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খরা মনিটরিং সেল আছে। ভারতের কর্ণাটক খরা মনিটরিং করে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। আমাদের দেশে মনিটরিং সেল নেই তার ওপর খরা নিয়ে আলাদাভাবে তেমন কোনো গবেষণা বা কাজও হয়নি।
ড. সাত্তার আরো বলেন, ইতোপূর্বে ড্রাউট মনিটরিং সেল প্রকল্প তৈরী করেও কাজে লাগানো যায়নি। গত ১১ মার্চ বাংলাদেশ কৃষি কাউন্সিলের জাতীয় কৃষি নীতি ২০১৮ এর খসড়া পর্যালোচনা কর্মশালায় বিষয়টি তুলে ধরেছি। দেশে আবহাওয়া অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (স্পারসো) আছে। অচিরেই দেশে বঙ্গবন্ধু স্যালেলাইট-১ উৎক্ষেপন হবে। খরা ভাবনার মধ্যে থাকলেও তা মোকাবেলার কার্যকর উদ্যোগ নেই। এখন জরুরী ভিত্তিতে খরা পরিবিক্ষণ কেন্দ্র করার সময় এসেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর, স্পারসো ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সহায়তায় খরার আগাম পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব। এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কিকরণের কর্তব্যরত আবহাওয়াবিদ বলেন, ঠিক ওইভাবে বা আলাদা করে খরার কোনো পূর্বাভাস এখন দেয়া হয় না। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব হোসেন