জাফর আহমদ: যে দেশকে স্বাধীন করতে যুদ্ধ করেছেন সময়ের ফের সেখানেই তাকে হতে হয়েছে কারাবন্দি। এ হলো বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক- ই- ইলাহী চৌধুরী । ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ের ঘটনা চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছেন তাঁর নতুন বই ‘চেরিয়ট অফ লাইফ: লিবারেশন ওয়ার, পলিটিক্স এন্ড সোজার্ন ইন জেল’ এর মাধ্যমে। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে বইটি আনুষ্ঠিকভাবে প্রকাশ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বইটির আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ইংরেজি দৈনিক দ্যা ডেইলি স্টারের সাবেক নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ বদরুল আহসান, বিডিনিউজের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী, একাত্তর টিভির সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাহিত্যিক সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আরিফা রহমান।
অর্থমন্ত্রী বলেন , মুক্তিযুদ্ধ ও ২০০৮ সালের জেলযাত্রাÑ এ দুটি ঘটনা সুন্দরভাবে উঠে এসেছে এ বইটিতে। এতে সাবলীলভাবে লেখকের কর্মময় জীবন ও তৎকালীন ইতিহাস উঠে এসেছে। বইটির বিভিন্ন অংশ পাঠ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ইংরেজ আমলের কারাগার আর এখন কারাগারের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। শুধুমাত্র কিছু পরিবর্তন এসেছে যা না হলেই নয়।
বইটি আরেকটি অংশ তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তীতে দাতারা বাংলাদেশকে নিয়ে খারাপ খারাপ কথা বলছিল। আমাদের সাহায্য না দেওয়ার কথা দাতারা ভেবেছিল। কিন্ত বঙ্গবন্ধু বলেছেন, আমরা স্বাধীনজাতি। এখানে কোন খবরদারি এখন আর চলবে না।
বক্তরা বলেন, বইটিতে ফুটে ইঠেছে তরুণ বসয়ের আলোকিত ক্যারিয়ার এবং হঠাৎ দেশের রাজনৈতিক ঘূর্ণিঝড়ে আটকা পড়ার দ্বিধাদ্বন্দ্ব। সংকট আর অনিশ্চিয়তার মধ্যে দিয়ে মাতৃভূমির অধিকার আদায়ের আন্দোলনে যোগ দিয়ে তিনি স্বাক্ষী হযেছেন এমন সব ঐতিহাসিক ঘটনার, যার ধারবাহিকতায় এসেছিল স্বাধীন বাংলাদেশের ঘোষণা। তবে স্মৃতিকথার কালরেখাই সীমাবন্ধ রাখেননি লেখক। ব্যাখ্যা করেছেন ২০০৭ সালের জরুরি অবস্থা জারি, সেই সময়ে তার ওপর মিথ্যা অপবাদ ও শাস্তি চাপানোর চেষ্টা, কারাবাস এবং তার মধ্যে দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে নিজের স্বাধীনতার অনিশ্চিয়তার সেই সময়গুলোর আবেক দিয়ে বর্ণনা করেছেন তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, সমাজে কিছু মানুষ আছে, যারা ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকেন। কিন্তু ড. তৌফিক বাংলাদেশের ইতিহাস বিবর্তনের অংশ। তার রচিত বইয়ে স্বাধীনতা ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘটনা সুন্দরভাবে উঠে এসেছে।
সৈয়দ বদরুল আহসান মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের ইতিহাস আরো বেশি ইংরেজিতে বই হিসেবে লেখার পরামর্শ দেন। বইটির লেখক ড. তৌফিক বই লেখার পেছনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন, নতুন প্রজন্মের জন্য মুক্তিযুদ্ধের কিছু ঘটনা লিপিবদ্ধ করতে চেয়েছি। বইটিতে মনে কথা লেখার চেষ্টা করেছি।
##