স্বাধীনতা দিবসে এগিয়ে চলার প্রত্যয়
শাকিল আহমেদ : দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয়ে স্বাধীনতার বার্ষিকীতে একাত্তরের শহীদদের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
দিবসটি উপলক্ষে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নামে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে। লাখো মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় ভরে উঠে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গন। প্রত্যুষে রাজধানীতে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ৪৭ বছর পূর্ণ করা বাংলাদেশে এবারের স্বাধীনতা দিবস এসেছে নতুন অনুষঙ্গ নিয়ে। এ বছরই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠার যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি মিলেছে জাতিসংঘের কাছ থেকে। এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের সামনে যেমন নতুন চ্যালেঞ্জ এনে দিয়েছে, তেমনি রয়েছে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে আরও এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন। গতকাল সকাল ৫টা ৫৮ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। এসময় ৩ বাহিনীর সুসজ্জিত দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করেন। এরপর একে একে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ১৪ দল, বিএনপি,বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার, কূটনীতিক, বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থা ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান সংসদের প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ, রওশন এরশাদ ও নেতাকর্মীরা। রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধ। বেলা যত গড়াতে থাকে ততই ভিড় বাড়তে থাকে। ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ।
সরেজমিনে দেখা যায়, লাল সবুজ শাড়িতে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে নারীরা। ছোট বড় অনেকের হাতে দেখা গেছে ছোট ছোট পতাকা। গালে ও শরীরে একেছে স্বাধীনতার ট্যাটু। স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গন জুড়ে চলছে দেশাত্ববোধক গান। বীর শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে ছোট ছোট শিশু কিশোররা। মিরপুর থেকে পরিবার নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন চিকিৎসক মনিরুল ইসলাম তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় অমি ছোট ছিলাম তবে যুদ্ধের অনেক কিছুই মনে আছে। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। তাই সন্তানদের স্বাধীনতার ইতিহাস সর্ম্পকে জানাতে বিশেষ দিনগুলোতে এখানে নিয়ে আসি। যাতে ওরা দেশকে ভালোবেশে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়। শুধু মনিরুলই নয় এরকম অনেকেই পরিবার নিয়ে এসেছে জাতীয় বীরদের শ্রদ্ধা জানাতে তদের একটাই চওয়া জঙ্গিবাদ,হানাহানি, মুক্ত একটি সুন্দর আগামী বাংলাদেশ। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ ভবনসমূহ রাতে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, শিশু একাডেমীসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ স্মারক ডাক টিকেট প্রকাশ, হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রমসহ এ ধরনের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।