মুফতি আহমদ আবদুল্লাহ
অমুসলিমদের সাথে সাদৃশ্যতা অবলম্বন করা : প্রিয়নবী (সা.) দাঁড়ি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে ইহুদীদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ না হয়। এমনিভাবে ইহুদীদের সঙ্গে দূরত্ব বজার রাখবার জন্য দশই মুহররম রোজার সঙ্গে নয় তারিখেও রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। মোটকথা প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজাতীয় সংস্কৃতির সাদৃশ্য গ্রহণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। হুজুর (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যকোন জাতিকে অনুসরণ করবে, তাদের বেশভূষা গ্রহণ করবে, তাদের সংস্কৃতি আঁকড়ে ধরবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে (মেশকাত শরীফ:৩৭৫৫)। অর্থাৎ কেউ যখন ইসলাম ভুলে গিয়ে আপন গৌরব দূরে সরিয়ে দিয়ে বিজাতীয় সংস্কার গ্রহণ করবে, তাদের জন্যই এ ধমকি দিয়েছেন প্রিয়নবীজি।
হাসি ঠাট্টা
ইসলাম হাসিখুশি, ঠাট্টা মজাক ইত্যাদির সুযোগ দিয়েছেন। অধিকাংশ সময় নবী কারীম (সা.) সাহাবিদের সঙ্গে হাসি মজাক করতেন। কিন্তু নবিজীর হাসি মজাক কষ্টদায়ক কিংবা মিথ্যা হতো না। হযরত আবু হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত একদা সাহাবিগণ রাসূল (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, হুজুর আপনি তো আমাদের সঙ্গে হাসি ঠাট্টা মজাক করেন। নবিজী বললেন, আমি সত্য কথা ছাড়া অন্য কিছুই বলি না। যা সত্য এবং হক, তা বর্ণনা করি। (তিরমিজি শরীফ: ২/২০)
মিথ্যার আশ্রয়
আল্লাহ তায়ালা মিথ্যার ব্যাপারে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। রাসুল (সা.) এতে অসন্তুষ্ট হোন। কুরআনে মিথ্যাবাদীর ওপর অভিসম্পাত করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, মিথ্যাবাদীর উপর অভিশাপ। (সুরা আল ইমরান: ৬১) হাদিস শরিফে এ ব্যাপারে কঠোর বাণী শুনানো হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন মানুষ মিথ্যা বলে, তখন তার মিথ্যার দুর্গন্ধে রহমতের ফেরেশতা দূরে চলে যায়। ( তিরমিজি শরীফ: ২/১৯)।
ধোঁকা দেওয়া
মুসলমান একে অপরের সঙ্গে প্রতারণার আশ্রয় নিতে রাসুল ( সা.) নিষেধ করেছেন। হজরত আবু হুরায়রা (রাযি.) থেকে বর্ণিত প্রিয়নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমাদের ধোঁকা দিলো ( মুসলমানদের) তার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’ ( মুসলিম শরীফ: ১/৮০)। অন্য এক হাদীসে হজরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত রাসুল ( সা.) বলেন, ‘মুমিন একে অপরের কল্যাণকামী হয়। যদিও তাদের শরীর কিংবা ঘরবাড়ি একে অন্যের থেকে দূরে। নাফরমান লোক একে অপরের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করে, যদিও তাদের শরীর বা ঘর অতিনিকটে হয়।’ (আততারগিব ওয়াততারহিব: ২/৫৭৫)। একে অপরের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করা আল্লাহর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার নামান্তর। সুতরাং কোনো মুমিনের উচিৎ নয়, সে কারও সঙ্গে ধোঁকাবাজি করবে।
অন্যকে কষ্ট দেওয়া
ইসলামে একজন মুসলমান অপর মুসলমান ভাইকে যেনো কষ্ট না দেয়, সে ব্যাপারে হাদীসে বারবার বলা হয়েছে। কিন্তু এপ্রিলফুল দিবসে রয়েছে কেবলই কষ্ট। কিভাবে একজন আরেকজনকে ধোঁকায়, মিথ্যায় ফেলে কষ্ট দিতে পারে। এমনটি করা আমাদের একদমই উচিৎ নয়। হুজুর (সা.) বলেন, পূর্ণাঙ্গ মুসলমান সে, যার মুখ এবং হাত থেকে অন্য মুসলমান ভাই নিরাপদ থাকে। (বুখারী শরীফ: ০৬)। লেখক: শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক