কাউসার মাহমুদ
আরবি বারো মাসের মধ্যে রজব মাস অত্যন্ত সম্মানিত ও গুরুত্বপূর্ণ। কুরআনুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আকাশম-লী ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিন হতেই আল্লাহর বিধানে আল্লাহর নিকট মাস গণনায় মাস বরোটি, তন্মোধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস, ইহাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং ইহার মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি যুলুম করিওনা’ (সুরা তাওবা :৩৬)। আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে পুরো আরবে সারা বছরে চার মাস যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ থাকত। মহিমান্বিত রজব সেসব মাসের মধ্য থেকে একটি। এ মাসে আরবে যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ ছিল। রজব সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন, ‘রজব মাস হচ্ছে মহান আল্লাহর কাছে অত্যন্ত গুরুত্ববহ একটি মাস, ফজিলতের দিক থেকে রমজানের পরই এ মাসের স্থান। অন্য কোনো মাস এর সমপর্যায়ের নয়। এ মাসে কাফেরদের সঙ্গেও যুদ্ধ করা হারাম। রজব মাস আল্লাহর মাস, শাবান মাস আমার মাস এবং রমজান মাস হচ্ছে আমার উম্মতের মাস। যে ব্যক্তি রজব মাসের একটি দিন রোজা রাখে, মহান আল্লাহ তার ওপর সন্তুষ্ট হন, তার প্রতি মহান আল্লহর ক্রোধ দূর হয়ে যায় এবং জাহান্নামের একটি দরজা তার জন্য বন্ধ হয়ে যায়।
মূলত রজব মাস থেকেই পবিত্র রমযানের প্রস্তুতি চলতে থাকে। প্রত্যেক মুসলমান রমযানের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে। তাদের সে অপেক্ষায় আনন্দের সুখ-বাতাস বইতে শুরু করে রজবেই। মুমিনরা তখন রমযানের জন্য সার্বিকভাবে আমলের পূর্ণ প্রস্তুতি নেয়। পুরো মাস জুড়ে কিভাবে খোদা প্রেমে মগ্ন থাকা যায়! তার অনুশীলন শুরু হয় রজব থেকেই। মনেপ্রাণে খোদা প্রেমের পবিত্র আবহ মেখে তারা অপেক্ষা করে রমযানের। তাই রজব মাস যেন রমযানেরই ডাক দিয়ে যায়। অন্যান্য মাসের মতো রজব মাসেও বিশেষ কিছু নফল আমল রয়েছে; যা পালনের মাধ্যমে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি লাভ ও জান্নাত লাভের পথ সুগম হয়। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, পেয়ারে হাবীব রাসূল (সা.) রজব মাস এলে দু’হাত তুলে এ দোয়া পাঠ করতেন এবং সাহাবাদেরও পড়তে বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শা’বান ওয়া বাল্লিগনা ইলা শাহরির রমাদান।’ (মুসনাদে আহমদ)। অর্থ : হে আল্লাহ রজব আর শাবান মাসে আমাদের বরকত দান করে রমজান পর্যন্ত আমাদের জীবিত রাখুন, আমাদের রমজানের ফজিলত অর্জন করার তৌফিক দান করুন। লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামি উচ্চতর গবেষণা বিভাগ, ইকরা, বাংলাদেশ।