সাইফুল ইষলাম প্রবাল চৌ: ঠাকুরগাঁও : উত্তরের অবহেলিত জেলাগুলোর মধ্যে ঠাকুরগাঁও অন্যতম। এ জেলায় তেমন ভারী কোনো শিল্প কলকারখানা আজো গড়ে উঠেনি। ব্রিটিশ আমলে এখানে গড়ে ওঠা একটি বিমান বন্দর যা প্রতিষ্ঠার পর থেকে দু বার বন্ধ হয়ে যায়। ঠাকুরগাঁওবাসীর দীর্ঘদিনের চাওয়া ছিল ঠাকুরগাঁও বিমাবন্দরটি পুনরায় চালু করা। এমপি মন্ত্রীরা বিভিন্ন সময়ে ঠাকুরগাঁও এসে এখানকার মানুষদের আশ্বাস দেন এ বিমানবন্দরটি পুনরায় চালুর ব্যাপারে। আর তাই বিমানবন্দরটি পুনরায় চালুর বিষয়ে একবুক আশা বাঁধতে শুরু করে এ জেলার সাধারণ মানুষ।
সর্বশেষ তারা পথ চেয়ে থাকে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঠাকুরগাঁওয়ে আগমনের জন্যে। কিন্তু গত ২৯ মার্চ প্রধান মন্ত্রীর আগমনে জেলায় নানা উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তি স্থাপন হলেও বিমানবন্দরটির ব্যাপারে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। আর তাই আবারো বিমান বন্দরটি নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভোগছেন ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ। জানা যায়, দ্বিতীয় বিশযুদ্ধের সময় ১৯৪০ সালে ঠাকুরগাঁও জেলা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ সড়কের পাশে শিবগঞ্জ এলাকার সাড়ে ৫শ একর জমিতে স্থাপিত হয় এ বিমানবন্দরটি । বিমানবন্দরটির রানওয়ে ছিল ৩ টি এবং এতে সাব-রানওয়ে ছিল ১০ টি। পাকিস্তান আমলের প্রথম দিকে এ বিমান বন্দরটিকে ‘আর্মি স্টেট’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সিভিল অ্যাভিয়েশন বিভাগ আরো ১১০ একর জমি বর্ধিত করে সেখানে বিমানবন্দরের বর্তমান স্টল ভবন নির্মাণ ও রানওয়ে বর্ধিত করে এবং বিমানবন্দরটি চালু করে। তখন সামগ্রী পরিবহনসহ জরুরি কাজে এ বিমানবন্দরটি ব্যবহার করা হতো।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার সঙ্গে এর যোগাযোগ ছিল এবং ওই সময় ঢাকা-ঠাকুরগাঁও রুটে নিয়মিত বিমান সার্ভিস চালু ছিল। এরপর আবারো বন্ধ হয়ে যায় এটি। ১৯৮০ সালের দিকে বিমানবন্দরটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হলেকোটি টাকা ব্যয়ে টার্মিনাল ভবন নির্মাণ ও বিদ্যুতায়ানের কাজসহ রানওয়ে মেরামতের কাজ সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে এটিকে আর চালু করা হয়নি। মনসুর আলম ও শহিদুল নামের দুই ব্যক্তি বলেন, আমাদের এখানে বড় কোন কিছু ছিল না যা নিয়ে আমরা বাইরে গর্ব করতে পারতাম।
প্রধানমন্ত্রী এবার অনেক কিছুই দিয়েছেন যা এ জেলার চেহারা পাল্টে দেবে, তবে বিমানবন্দরটিও চালু করার ঘোষণা আরও ভাল হতো।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ প্রশাসক মুহাম্মদ সাদেক কুরাইশি জানান, প্রধানমন্ত্রী আমাদের অনেক কিছু দিয়েছেন এবার। সব চাওয়া তো আর একসঙ্গে পূরণ করা সম্ভব হয় না। আশা করি, আগামীতে আমরা বিমানবন্দরটি চালুর ব্যাপারে ভালো সংবাদ পাবো।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিমানবন্দরটি চালুর ব্যাপারে সরকারের বিভিন্ন উচ্চ মহলের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হবে। এটি ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের প্রাণের দাবি। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান