স্বপন কুমার দেব, মৌলভীবাজার: ডাকাতিকালে ধর্ষণ করা অনেকটা নেশায় পরিণত হয়েছিল কুখ্যাত ডাকাত মোস্তাকের। তবে ডাকাতির শিকার পরিবারগুলো লোকলজ্জার ভয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেনি। অবশ্য ডাকাতি ছাড়াও তার বিরুদ্ধে পৃথক ধর্ষণ মামলা রয়েছে। আন্ত:জেলা ডাকাতদলের সর্দার ভয়ঙ্কর সেই ডাকাতের নাম মোস্তাক আহমেদ (৪১)। ডাকাত মোস্তাক আহমেদ বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলে রয়েছে। কুলাউড়া থানা পুলিশ একটি ডাকাতি মামলায় তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদকালে সে পুলিশের কাছে এসব ভয়ংকর তথ্য দেয়। ডাকাত মোস্তাকের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের মৌলভীরচক গ্রামে।
পুলিশ জানায়, মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন থানায় ডাকাত সর্দার মোস্তাক আহমদের বিরুদ্ধে ৬টি ডাকাতির ও একটি ধর্ষণ মামলা রয়েছে। ডাকাতি করতে গিয়ে মোস্তাক নারী ধর্ষণ করতো বলে লোকমুখে জানা যায়। কিন্তু ধর্ষণের বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ ছিল না।
পুলিশ জানায় ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর কমলগঞ্জ উপজেলার একটি বাড়িতে ডাকাতিকালে এলাকাবাসী মোস্তাককে আটক করে গণপিটুনি দেয়। পরে আহত অবস্থায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সুস্থ হয়ে ওঠার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে মৌলভীবাজারের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
একই বছরের ১৭ নভেম্বর কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের একটি ডাকাতির ঘটনায় করা মামলায় মোস্তাককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আদালতের কাছে রিমান্ড আবেদন করে। এ প্রেক্ষিতে আদালত ২ এপ্রিল থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে কুলাউড়া থানা পুলিশকে মোস্তাকের দেয়া তথ্যমতে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি দেশীয় পাইপগান এবং দুটি গুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে মোস্তাকের গ্রামের বাড়ি রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজমুল হক সেলিম জানান, মোস্তাক একজন ভয়ঙ্কর প্রকৃতির ডাকাত। ২০০৮ সালে চানখারবিল গ্রামের এক গৃহবধুকে ধর্ষণের দায়ে করা একটি মামলা বিচারাধীন আছে। তার কারণে এলাকার মানুষও অতিষ্ঠ।
জানা যায়, ছোটকাল থেকে ৯০’র দশকে অর্থাৎ ১৪-১৫ বছর বয়স থেকে সে ডাকাতিতে সম্পৃক্ত। মষাজান গ্রামে তার স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে। তবে বাড়িতে তার খুব একটা যাতায়াত নেই। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার এসআই আনোয়ার হোসেন জানান, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে মোস্তাক ডাকাতিতে গিয়ে প্রায়ই নারীদের ধর্ষণ করতেন বলে স্বীকার করেছেন। আগে বিষয়টি জনশ্রুতি ছিল। অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের ঘটনায় রাজনগর থানায় মোস্তাকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।