নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকালেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী
মো. জয়নুল আবেদীন, আমতলী (বরগুনা): নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকালেন সাহসী স্কুল ছাত্রী আশা মনি। আশা মনি আমতলী উপজেলার দক্ষিণ রাওঘা গ্রামের মজনু গাজীর মেয়ে। সে দক্ষিণ রাওঘা নুর আল-আমিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্রী।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইউএনও মোঃ সরোয়ার হোসেনের কাছে এসে নিজের বাল্য বিয়ের কথা বলেন। পরে ইউএনও বাল্য বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ রাওঘা গ্রামের মজনু গাজীর নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া কন্যা আশা মনিকে বরিশালের লিটন (৩০) নামের এক ব্যবসায়ীর সাথে বিয়ে ঠিক করে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় বরিশাল বর লিটনের বাড়ীতে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ায় কথা ছিল। বিয়ের সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন করে মজনু গাজীর জামাতা বাদল খান, ভগ্নিপতি বাবুল মৃধা ও মামাত ভাই জসিম সরদার। আশা মনি এ খবর জানতে পেরে চাচাত ভাই মাহবুবুর রহমান নিপুর সহযোগিতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার হোসেনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়। বিয়ের সকল ঘটনা ইউএনওকে খুলে সে বলেন। তাৎক্ষনিক ইউএনওএ বিয়ে বন্ধের জন্য চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাদল খানকে সাথে নিয়ে আশা মনির বাড়িতে ছুটে যান। ওইখানে ইউএনও আশা মনির বাবা মজনু গাজী, মা লুচি বেগম, চাচা মোস্তফা গাজী ও জুয়েল গাজীসহ স্বজনদের ডেকে বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে বুঝাতে সক্ষম হয়। আশা মনির বাবা-মা তাদের নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে মেয়ের বিয়ে বন্ধ করে দেয়। এদিকে আশা মনি নিজের বিয়ে ভেঙ্গে দেয়ার জন্য ইউএনও’র কাছে যাওয়ার খবর শুনে বিয়ের সাথে জড়িতরা পালিয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সামসুল আলম বলেন, আশা মনি আমার বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্রী। ওই ছাত্রী নিজের বাল্য বিয়ে নিজে ভেঙ্গে দিয়েছে। আশা মনি আমার বিদ্যালয়ের অহংকার।
প্রতিটি ঘরে এমন আশা মনি জন্ম নেয়া প্রয়োজন। আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, আশা মনির বাবা-মা স্বজনদের সহযোগিতায় মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেছিলেন। বুঝিয়ে বলার পর তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরে বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে। তারা আমার সাথে প্রতিজ্ঞা করেছে উপযুক্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দিবেন না। সম্পাদনা: আবদুল্লাহ মজুমদার