নাজমুল ইসলাম কাসিমী
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রাসূলে (সা.) গোটা মানবজাতির জন্য সর্বশেষ দূত হিসেবে পাঠিয়েছেন। তাই তার ওপর আকীদা-বিশ্বাস ও আনুগত্য ছাড়া দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতার আশা করা অর্থহীন। কুরআন শরিফের বিভিন্ন জায়গায় এ বিষয়টি ঘোষিত হয়েছে। আল্লাহকে পাওয়ার একমাত্র পথই হলো রাসূলুল্লাহ (সা.) এর অনুসরণ। তাই তার জন্য হৃদয়ে মুহাব্বাত ও ভালোবাসা লালন করা এবং তার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করা প্রত্যেক উম্মতের ঈমানি দায়িত্ব। কুরআন মাজীদে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা নবী করীম (সা.) এর জন্য দুরূদ পাঠের তথা আল্লাহর দরবারে তার জন্য দোয়া করার আদেশ করেছেন। এটা একদিকে যেমন আল্লাহর কাছে তাঁর রাসূলের মর্যাদার প্রমাণ। অন্যদিকে মুমিন বান্দার রহমত ও বরকত লাভের অন্যতম উপায়। দুরূদ শরিফ আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম একটি মাধ্যম। রাহমাতুল লিল আলামিন, শাফিউল মুযনিবিন অজ¯্র ভালোবাসা এবং অসংখ্য অনুগ্রহের প্রতিদান আদায়ের একটি মাধ্যম। যেটা আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন নিম্নক্ত আয়াতের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ কর। (সুরা আহযাব-৫৬) দুরুদ শরিফের অনেক ফযিলত। বিশেষত যখন আমরা মদিনার নিকটবর্তী হই। হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দুরূদ পড়ে, আল্লাহ পাক তার ওপর দশবার রহমত নাযিল করেন। আর যে ব্যক্তি আমার আমার কবরের কাছে এসে একবার দুরুদ পেশ করে, এবং আমি তা নিজ কানে শুনি। আর যে ব্যক্তি দূর থেকে পড়ে তা আমার কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ৬১৬; সু’আবুল ঈমান, ইমামা বায়হাকি, হাদিস নং-১৫৪৪)
সবচেয়ে উত্তম দুরুদ শরিফ হলো, দুরুদে ইবরাহিম। যেটা আমরা আমাদের নামাজে পড়ে থাকি। দুরূদ শরিফের অসংখ্য শব্দাবলী আছে। সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত শব্দ হলো, সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক ওলামায়ে কেরাম সকল দুরুদকে একত্রিত করেছেন। উত্তম হলো, নির্ভরযোগ্য এমন কোনো হাদিসের কিতাব কিনে নেয়া, যেটায় দুরুদের সকল শব্দাবলী বিদ্যমান আছে। এবং যখনই সুযোগ হয়, ফাঁকেফাঁকে পাবন্দির সঙ্গে দুরুদের এ আমলকে অব্যাহত করা। এ ক্ষেত্রে ‘যাদুস সা’ঈদ’; ‘আল হিযবুল আ’অযম’; এবং ‘গুলিস্তায়ে দুরুদ’ পড়া যেতে পারে। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দিন।