‘ঢাবি কর্তৃপক্ষের অধিকার নেই কারো মোবাইল ফোন চেক করার’
মাহবুবুল ইসলাম : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অবস্থা দেখে স্পষ্ট যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কোনো স্বাধীনতা নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দলীয়ভাবে রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আলাদা একটি স্বতন্ত্র অস্তিত্ব সেটা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনও অনেক বেশিই রাজনীতিকরণ হয়ে গেছে। কবি সুলতানা কামাল হল থেকে মধ্যরাতে ছাত্রীদের বের করা নিয়ে আলাপকালে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট আফসান চৌধুরী আমাদের অর্থনীতিকে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অধিকার নেই কারো মোবাইল ফোন চেক করার। রাতে হল থেকে তাদের বের করে দিল এবং ভিসি পর্যন্ত বললো যে, তারা নাকি ফোনে কি নাকি ছড়াচ্ছিল। এটা কি ভিসির কাজ? একজন ছাত্রলীগের ক্যাডারের মতো করে যদি কথা বলেন, তাহলে আর ভিসি হয়ে কি লাভ? এটা তো শুধু দুঃখ জনক নয় এটা সংকোচজনক। এটা প্রশাসনের কি ধরনের ভূমিকা ? কারো স্মার্ট ফোন চেক করার অধিকার কারো নেই, এটা বেআইনি। যদি তারা অন্যায় কিছু করে থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে এবং পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যাবে। এতে তো মনে হচ্ছে হল প্রশাসন সম্পূর্ণ অনিয়ন্ত্রিত এবং অভিভাবকহীন। কারো সেলফোন দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা, এই অধিকার একমাত্র পুলিশেরই আছে। এশাকে তারা রাতে বের করে দিয়েছিল, আবার তাকে ফেরত নিল, তার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। এশার ক্ষেত্রে তদন্ত কমিটি গঠন করলো, কিন্তু সাধারণ ছাত্রীদেরকে বের করে দেওয়ার সময় কি তারা তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল? তদন্ত কমিটি গঠন করে তার তো বের করে দেওয়ার অধিকার নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কি আলাদা কোনো দেশ?
তিনি আরো বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত কয়েকদিনে যে পরিস্থিতি বিরাজমান তাতে সাধারণ ছাত্রদের ভবিষ্যৎ জীবনের উপর অবশ্যই প্রভাব পড়বে। ছাত্রদের ভালোমন্দের চেয়ে তারা রাজনীতির দিকেই বেশি নজর দিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়মুখী ছাত্ররা এই বিশ্ববিদ্যালয রেখে কোথায় যাবে ? তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার যে মান হারিয়েছে তা অকল্পনীয়। আন্দোলনটা শুরু হয়েছিল চাকরি নিয়ে। এটাকে নিয়ে যদি আওয়ামী লীগ বা সরকার, কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ রাজনীতিকরণ না করত, তাহলে কিন্তু এই ঝামেলা হতই না। এটা তারা কেন করেছে তা বুঝা যায় না। কেউ স্বীকারই করতে পারছেনা যে, এটা সাধারণ ছাত্রদের আন্দোলন ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা সরকার কেউই কিন্তু বলতে পারেনি এটা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন। শেষ পর্যন্তও এটা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন না। মানুষের রুটি রুজিতে হাত দিলে তো আন্দোলন হবেই। কোন অবস্থায় গেলে মানুষ এ নিয়েও আন্দোলন করতে পারে? তার মানে ঘুরে ফিরে আমাদের সমস্যাটা হচ্ছে বিনিয়োগে। চাকরি তৈরি হচ্ছে না, যদিও হচ্ছে তবে তার নিয়োগ কিংবা ক্ষেত্র তুলনামুলক খুবই কম। বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবীদের লিখিয়ে পড়িয়ে তাদেরকে কোন চাকরি দিবে তারা? আমলার চাকরি ছাড়া তো কোনো চাকরিই নেই। বাধ্য হয়ে এই আন্দোলন করতে হয়েছে।