ডলার, তেলের দাম বৃদ্ধি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎপরতায় বাড়ছে রেমিটেন্স প্রবাহ
আনোয়ার হোসেন: টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নানামুখী পদক্ষেপে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত কয়েক মাস ধরে রেমিটেন্স বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযাযী, বর্তমানে ডলারের বিনিময় মূল্য প্রায় ৮৩ টাকা(৮২. ৯৮ টাকা)। গত বছরের এপ্রিল মাসে ডলারের মূল্য ছিলো ৭৯.৮৫ টাকা। ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওায়ায় প্রবাসীরা ডলার ভাঙ্গিয়ে দেশে বেশি টাকা পাচ্ছে। এর প্রভাবে পড়ছে রেমিটেন্সে। তাই বর্তমানে প্রবাসি আয়ে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত আছে।
প্রবাসী আয় বৃদ্ধির পেছনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নানামুখী পদক্ষেপ ভুমিকা রাখছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে, বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠাতে ব্যাপক প্রচারণা, টাকা পাঠানোয় ব্যয় কমানো এবং হুন্ডি ও অবৈধ পথে অর্থ পাঠাতে নিরুৎসাহিত করা। এর ফলে দেখা যায়, গত মার্চ মাসে আগের মাসের তুলনায় রেমিটেন্স বেশি আসে ১৬ কোটি মার্কিন ডলার। এছাড়াও এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ৩২ কোটি এবং দ্বিতীয় সপ্তাহে ৩৭ কোটি মার্কিন ডলার প্রবাসী আয় হয়। সব মিলিয়ে এপ্রিল মাসের অর্ধেক না পেরোতেই রেমিটেন্স আসার পরিমাণ ৭০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। অথচ গত অর্থ বছরের এপ্রিলে রেমিটেন্স আহরণ হয় মাত্র ১০৯ কোটি মার্কিন ডলার।
প্রবাসী আয় বৃদ্ধির বিষয়টির সাথে একমত পোষন করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুটি বিষয় আছে। এটি অর্থনীতিতে অনেক সময়ই হয়। ডলারের বিপরীতে মানুষ বেশি টাকা পাচ্ছে, তাই প্রবাসী আয় বেড়ে গেছে। অন্যদিকে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের আমদানিকৃত পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়া। প্রবাসী বাংলাদেশীর সিংহভাগই মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত। আর এ সমস্ত দেশই তেল সমৃদ্ধ দেশ। তাই তেলের দাম বৃদ্ধিতে তাদের অর্থনৈতিক চাকা বেগবান হচ্ছে। এতে আমাদের দেশের প্রবাসীদেরও আয় বাড়ছে। যার ফলে রেমিটেন্স বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চলতি অর্থ বছরে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসছে সৌদি আরব থেকে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত, যুক্তরাজ্য ও ইটালী।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত মোট রেমিটেন্স আহরণের পরিমাণ ১ হাজার ৭৬ কোটি মার্কিন ডলার। গত অর্থবছরে রেমিটেন্স আহরণের পরিমাণ ছিলো ১ হাজার ২শ’ ৭৬ কোটি মার্কিন ডলার।