খ্রিস্টীয় দর্পণ ডেস্ক
যাও, যাহা দেখিলে ও শুনিলে তাহার সংবাদ যোহনকে দেও; অন্ধেরা দেখিতে পাইতেছে, খঞ্জেরা চলিতেছে, কুষ্ঠরা শুচীকৃত হইতেছে, বধিরেরা শুনিতেছে, মৃতেরা উত্থাপিত হইতেছে, দরিদ্রদের নিকটে সুসমাচার প্রচারিত হইতেছে।
যোহন বাপ্তাইজক ছিলেন একজন গ্রামবাসী। তিনি মরুভূমির পরিষ্কার বায়ু সেবন করতেন এবং বনের ফলমূল খেয়ে বাঁচতেন। তিনি যর্দন নদীর পশ্চিমাঞ্চলে বিশাল জনতার মাঝে প্রচার করেছিলেন। এমন কি ক্ষমতাশালী হেরোদও তার বক্তৃতা শুনতেন এবং যোহনের মন পরিবর্তনের আহবানে তিনি থর থর করে কেঁপে উঠতেন। আর এখন যোহন হেরোদের দূর্গের মধ্যে জেলে আটক রয়েছেন। যোহন অত্যন্ত পরিশ্রমী ব্যক্তি কিন্তু তার কিছুই করার নেই এবং কারাগারে বন্দি জীবন তার কাছে ভীষন একঘেয়ে বলে মনে হল। পঙ্গপাল, বনমধু এবং ফলমূলের পরিবর্তে কারাগারের অত্যন্ত নিম্নমানের বিশ্রী স্বাদ বিহীন খাবার তাকে খেতে হত। কারাকক্ষে বসে যোহন অপেক্ষায় ছিলেন কখন যীশু তাকে অধঃপতিত করেন এবং অহন্কারী গর্বিত শাসকের হাত থেকে দরিদ্রদের নিস্তার করেন। কিন্তু যীশু শিক্ষা দিতে এবং সুস্থ করতে পেরে সুখী হবেন বলে মনে হচ্ছিল।
যোহনের মনে অদ্ভুত প্রশ্ন জাগল। এমন কি হতে পারে যে, যীশু, খ্রিস্ট নন? তিনি নীরবে তার দু‘জন শিষ্য পাঠালেন যীশুর কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে যাঁর আগমন হবে, সে ব্যক্তি কি আপনি? না, আমরা অন্যের অপেক্ষায় থাকব? (লূক ৭:২০ পদ)।
অত্যন্ত বেদনাদায়ক একটি প্রশ্ন, নয় কি? একটু চিন্তা করে দেখ যে ব্যক্তি যীশুকে দেখেছিলেন, যিনি তাঁকে বাপ্তইজ করেছিলেন এখন তার মনে সন্দেহ আসছে, তিনি মসীহ কিনা। তোমরা হয়ত মনে করতে পার যে, যীশু উত্তেজিত হয়ে তাকে ধমক দেবেন এ জাতীয় প্রশ্ন করার জন্য। কিন্তু তা হয়নি। বরং যীশু কিছুই বললেন না। সেই দন্ডে তিনি অনেক লোককে রোগ, ব্যাধি ও দুষ্ট আত্মা হইতে সুস্থ করিলেন এবং অনেক অন্ধকে চক্ষু দিলেন। (লূক ৭:২১ পদ) তারপর তিনি আমাদের আজকের পদটির কথা বললেন। এটিই ছিল যথেষ্ট এবং যোহনের শিষ্যগন যে সমাচার নিয়ে এলেন তা শুনে যোহনের বিশ্বাস নবায়িত হল।
প্রকৃতপক্ষে যিনি যীশুকে দেখেছেন এবং তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন, তার যদি প্রশ্ন থাকতে পারে, তবে এটি কি অবাক হবার বিষয় যে অনেক যুবক যুবতীরও প্রশ্ন থাকতে পারে? আমরা যদি প্রকৃত পক্ষে মনের সরলতায় সত্য বিষয়টি জানবার ইচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করি, তবে ঈশ্বর রাগান্বিত হননা।
যদি তোমার মন্ডলির বিষয়ে তোমার কোন প্রশ্ন থাকে, যীশুর কার্য অথবা অন্যান্য আত্মিক বিষয় নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকে, তবে তার উত্তর পাবার জন্য প্রার্থনা সহকারে অন্বেষণ কর। সাহায্যের জন্য পবিত্র আত্মাকে আমন্ত্রণ জানাও। একজন পুরোহিত, তোমার শিক্ষক, অথবা তোমার পিতামাতাকে জিজ্ঞাসা কর। নিজেকে দোষী অথবা লাজুক মনে করবেনা, কিন্তু নিশ্চিত হও যে, এমন কি যীশু যে ত্রাণকর্তা, তা প্রমাণ করবার জন্য যীশু অতীব নম্র ভাবে যোহনের শিষ্যদের কাছে এমন কিছু দেখিয়ে ছিলেন যা তাদেরকে মুগ্ধ করত, সুতরাং পবিত্র আত্মা তোমাকে সঠিক উত্তর পাবার পথ দেখিয়ে দিবেন। সূত্র: ক্রাইষ্টবিডি