ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার ‘অবনতি’ অব্যাহত: মার্কিন রিপোর্ট
মনিরা আখতার মীরা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের এক কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘২০১৭ সালে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার অবস্থা ক্রমেই অবনতির দিকে গিয়েছে।’ হিন্দু জাতীয়তাবাদী গ্রুপগুলোর ‘গেরুয়াকরণ’ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে অহিন্দু ও দলিত গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি অব্যাহত থাকায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ইউএস কমিশন ফর ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ)-এর সর্বশেষ রিপোর্টে ভারতকে আফগানিস্তান, বাহরাইন, আজারবাইজান, কিউবা, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, কাজাখস্তান, লাওস, মালয়েশিয়া ও তুরস্কের সঙ্গে দ্বিতীয় স্তরে রাখা রয়েছে।
ইউএসসিআইআরএফ রিপোর্টে বলা হয়, গত এক দশকে ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর অবস্থা ক্রমাগত খারাপ হয়েছে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস), সংঘ পরিবার, বিশ্বহিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)’র মতো হিন্দু-জাতীয়বাদী গ্রুপগুলো অহিন্দু ও নিম্নবর্ণের হিন্দুদের বিচ্ছিন্ন করতে বহুরকম তৎপরতা চালিয়েছে। মুসলমান, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, এমনকি নিম্নবর্ণের হিন্দুরাও (দলিত) এসব অপতৎপরতার শিকার হয়েছে। সাউথএশিয়ানমনিটর।
ইউএসসিআইআরএফ’র সর্বশেষ বার্ষিক রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এসব গ্রুপ সহিংসতা থেকে শুরু করে ভীতি প্রদর্শনের মতো নানা পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। এদের রাজনৈতিক ক্ষমতার অবনতি হয়েছে।
এতে বলা হয়, এক-তৃতীয়াংশ রাজ্যের সরকার অহিন্দুদের বিরুদ্ধে ধর্মান্তর বিরোধী এবং গো-হত্যা বিরোধী আইন বলবৎ করেছে। ২০১৭ সালে গো-রক্ষকরা অন্তত ১০ জনকে পিটিয়ে মেরেছে। ‘ঘর ওয়াসপি’ নামক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অহিন্দুদের হিন্দু ধর্মে দীক্ষিত করার খবরও জানা যায়। বিদেশী অর্থে পরিচালিত এনজিওগুলোকে ধর্মীয় সংখ্যালঘু গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে নির্বিচারে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
রিপোর্টে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সময় ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। ভারত সরকার যেন ইউএসসিআইআরএফ’কে সফরের অনুমতি দেয় সে জন্যও দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানানো হয়েছে রিপোর্টে।