কেন শেখ হাসিনার নৌকায় ভরসা রাখবেন ?
শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশকে পিছনে তাকাতে হয়নি। এরপর থেকে আজ অবধি চলমান বাংলাদেশের জয়রথ। ক্ষমতা গ্রহণের পরই একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের বিচার করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করেন জননেত্রী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনের যথাযথ ব্যবস্থা ও ভাতা প্রদান করেন। দীর্ঘদিন চলমান সমুদ্রসীমা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করেন এবং বিজয় লাভ করেন। ফলে ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধান হয়। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ছিটমহলবাসীদের বন্দি জীবনের অবসান ঘটে, আশা আকাক্সক্ষা পূরণ করেন নেত্রী। বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সম্পন্ন হয়। তাদের নিজস্ব পরিচয় দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন তিনিই। বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ এনে পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়ন না করায় শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংক এর বিরুদ্ধে মামলা করেন এবং এতে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার দুঃসাহসী সিদ্ধান্ত নেন। যা এখন বাস্তব এবং দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার মাঝে যোগাযোগ স্থাপনে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে অচিরে।
বর্তমানে স্বাক্ষরতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২.৭৬ভাগ। প্রতিটা উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে, ধর্মের প্রতি অনুরাগী করে গড়ে তোলার জন্য কয়েক হাজার মাদ্রাসা নির্মিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করেছেন শেখ হাসিনা। আগের চেয়ে বেকারত্বের হার অনেক কমে গিয়েছে। লিঙ্গ সমতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নারীদের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুযোগ সৃষ্টি করে এগিয়ে এনেছেন তাদের। সামরিক বাহিনীসহ সকল ক্ষেত্রে নারীদের যুক্ত করে বৈষম্য দূর করেছেন তিনি। নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়িয়ে করেছেন ৬ মাস, যা আগে ছিল ২ মাস। কৃষিক্ষেত্রে কৃষকদের জন্য কৃষি ভর্তুকি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কৃষিখাতে এখন পর্যন্ত ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে ৯০০০ কোটি টাকা। কৃষকদের জন্য অনলাইন সেবা চালু করা হয়েছে এবং খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৪০০ লক্ষ মেট্রিকটন। যা আগে ছিলো ৫৩ লক্ষ মেট্রিকটন। বর্তমান সরকারের আমলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় উন্নতি হয়েছে ব্যাপক। জননেত্রী নতুন মেডিকেল কলেজ স্থাপন করেছেন ১৭টি। বর্তমানে সরকারি মেডিকেল কলেজ ৩১টি। অনলাইনে চিকিৎসা সেবা চালু হয়েছে। প্রত্যেক ডাক্তারকে পাশ করার পর ১ম ও ২য় বছর প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসা সেবা প্রদান বাধ্যতামূলক করেছেন তিনি। শিশুমৃত্যু হার কমে গেছে। শতভাগ জনগোষ্ঠীকে বিদ্যুৎ-এর আওতাধীন আনার কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। বর্তমানে ৮৩% লোক এর আওতাভুক্ত হয়েছে যা আগে ছিল ৩৬%। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে এখন ১৫৮২১ মেগাওয়াট দাঁড়িয়েছে যা আগে ছিল ১০৮৭৯ মেগাওয়াট। বর্তমানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা ১১৫টি, আগে ছিল ৮৮টি। রূপপুরে নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর মাথাপিছু আয় বেড়ে এখন ১৬১০ মার্কিন ডলার হয়েছে আগে যা ছিল ৯০০ ডলার। প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.২৪। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৩ বিলিয়ন ডলার যা আগে ছিল ৩২ বিলিয়ন ডলার। যোগাযোগ ব্যবস্থায় এ সরকারের অবদান অবিস্মরণীয়। পদ্মাসেতুসহ ঢাকা শহরকে যানজট মুক্ত করতে ঢাকা শহরকে ফ্লাইওভারের মোড়কে সাজানো, বিভিন্ন মহাসড়ককে ৪ লেনে উন্নীতকরণ,ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ, মেট্রোরেল চালু, পদ্মাসেতুতে রেল সংযোগ, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেস রেলওয়ে ও এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেস ওয়ে সহ ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে। বর্তমানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ অন্য দেশগুলোর জন্য আদর্শ। বিগত সময়ে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ সকল দুর্যোগ মোকাবেলায় এই সরকার সফল শতভাগ।
দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, সতর্কতা জারি ও দুর্যোগ সংগঠিত হওয়ার পূর্বেই নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া ও দুর্যোগ মোকাবেলাসহ সকল কাজে সফল এই সরকার। পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ ২য় অবস্থানে চলে এসেেেছ। পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশ ৫৭তম স্যাটেলাইট ক্ষমতাধর দেশ হতে যাচ্ছে। সবুজায়নের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। পরিবেশ উন্নয়ন কর্মসূচি, আন্তঃপরিবেশ ও টেকসই উন্নয়নের স্বীকৃতি হিসেবে দেশরতœ শেখ হাসিনা ঈযধসঢ়রড়হ ঙভ ঞযব ঊধৎঃয-২০১৫ নির্বাচিত হয়েছেন। প্রায় ১০লাখ রোহিঙ্গাকে মানবিক আশ্রয় দিয়ে ও লালনপালন করে সারাবিশ্বের কাছে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করেছেন। যার স্বীকৃতিতে তিনি গড়ঃযবৎ ঙভ ঐঁসধহরঃু উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ও উন্নত, সমৃদ্ধিশালী এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে শেখ হাসিনার বিকল্প একমাত্র শেখ হাসিনাই। এজন্য আওয়ামীলীগ সরকারকে আবারও ক্ষমতায় এনে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখুন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ