অকুতোভয় তরুণদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে লাভ নাই
নূরুল হক নূর
ইতিহাসের প্রতিটি সফল আন্দোলন-সংগ্রামেই কিছু মানুষকে একটু বেশী ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। যেমন-’৫২ এর ভাষা আন্দোলনে রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, শফিউর, ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ, ২ লক্ষ মা-বোনসহ আহত যোদ্ধারা, ’৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ডা. মিলন, নুর হোসেন সহ অনেকেই আতœত্যাগ করেছেন। নিজেদের জীবনে হুমকি ও নিরাপত্তাহীনতা রয়েছে, জেনে-শুনেই সামনে আমরা তরুণরা “কোটা সংস্কার আন্দোলন”এর নেতৃত্ব দিয়েছি। ১৬ ই এপ্রিল ঢাকা মেডিকেলের জরুরী বিভাগের গেটে উপস্থিত লোকজনের সামনে রিক্সা টেনে-হিঁচড়ে আমাকে, ফারুক ভাই এবং রাশেদ ভাইকে যখন ডিবি পুলিশ চোখ বেঁধে নিয়ে গিয়েছিল, তখনই ভেবেছিলাম মুক্ত পৃথিবীর আলো বাতাস হয়তো আর দেখা হবে না। তাই মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনাও করেছিলাম। তবে মনোবল তখনও অটুট ছিল এই ভেবে যে, আমরা কোন অন্যায় করিনি। সারা বাংলার মেধাবী ছাত্রসমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠায় একটা “যৌক্তিক দাবি” নিয়ে আন্দোলন করছি, সারা বাংলার ছাত্রসমাজের অকুন্ঠ সমর্থন ও ভালবাসা রয়েছে। যা সব সময়ই আমাদেরকে সাহস যুগিয়েছে। আর ডিবি অফিস থেকে যখন ৩ জন মুক্তি পেয়েছিলাম, তখন মনে হয়েছিল ২য় জীবন পেয়েছি। সেদিন খুব দৃঢ়ভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সময়ের সাহসী সন্তান ও প্রতিবাদী এ তরুণদের সাথে আমৃত্য মানুষের “ন্যায় সঙ্গত অধিকার” প্রতিষ্ঠায় লড়াই করে যাবো। সুতরাং অকুতোভয় তরুণদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে লাভ নাই।
পরিচিতি : যুগ্ম আহ্বায়ক, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ / মতামত গ্রহণ : মো. এনামুল হক এনা / সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ