আন্দোলনের কৌশল পরিবর্তনে বিএনপিতে আলোচনা জামিনে আশা খালেদা জিয়ার
শাহানুজ্জামান টিটু: ৮ মে জামিনের আশা করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। অন্যদিকে আইনজীবীদের প্রস্তুতি, কারাগারে স্বজনদের সাক্ষাৎ, নেত্রীর মুক্তি আন্দোলনে কৌশল পরিবর্তনের আলোচনাসহ বেশ কিছু বিষয়ে দলটির নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে দলের নির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বৈঠক হয়েছে। শুক্রবার রাতে ওই বৈঠকে দলটির কয়েকজন নেতা খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের গতানুগতিক ধারার পরির্বতন করে কঠোর কর্মসূচির বিষয়ে দলের নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্ত নেয়ার জোর তাগিদ দেন। তবে ওই বৈঠকে এখনই কঠোর কোনো কর্মসূচিতে না যাওয়ার ব্যাপারে অধিকাংশ নেতা একমত পোষণ করেন। সূত্র জানায়, নেতাদের মধ্যে আন্দোলনের পক্ষে বিপক্ষে যুক্তিতর্কের একপর্যায়ে যেসব নেতা কঠোর আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নেন তারা তাদের মনোভাব পরিবর্তন করেন। তবে নেতাদের মধ্যে কোনো ভিন্ন মত নেই বলে জানায় ওই সূত্র।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আগামীতে দলের করণীয় নিয়ে দলের নেতারা তাদের মতামত দিয়েছে। আমাদের দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্পাদকম-লীর যৌথ সভা হয়েছে। সেখানে দলের আগামী দিনের করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, আগামীতে গণতন্ত্র উদ্ধারে কীভাবে কাজ করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সভায় বিশেষ করে খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও তার মুক্তির বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে।
গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন তার আইনজীবীরা। এরআগে তার সঙ্গে দেখা করেছেন তার স্বজনরা। তারা কোনো কথা না বললেও দলটির একাধিক সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকলেও তার মনোবল দৃঢ় রয়েছে। তিনি আশা করছেন ৮ মে তার জামিন হবে। এবং অন্য মামলাগুলোতেও তার পর্যায়ক্রমে জামিন হবে। জামিনের জন্য আইনী লড়াইয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছেন। খালেদা জিয়ার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও আইনজীবী প্যানেলের সঙ্গে শলাপরার্মশ সেরে নিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান বলেন, আপনারা জানেন ম্যাডামের নামে যত মামলা রয়েছে তা সবই জামিন যোগ্য। কিন্তু সর্ম্পূণ রাজনৈতিক কারণে তার জামিন বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে। তবে আমরা আশাবাদি ৮ মে ম্যাডাম জামিন পাবেন এবং অন্যমামলাগুলোতেও তিনি জামিন প্রাপ্ত হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির মধ্যে কোনো ভিন্নতা নেই। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। আন্দোলন বলে কয়ে হয় না। কারণ বাস্তবতা আমাদেরকে অনুধাবন করতে হবে। ৬৯ থেকে বর্তমান সরকারের আগে পর্যন্ত যে ধরণের আন্দোলন হয়েছে তার দিকে লক্ষ্য করুন দেখবেন ওই আন্দোলনগুলোর সঙ্গে এখন অবস্থার অনেক পরিবর্তন। এখনকার বাস্তবতা ভিন্ন। কারণ তখন কোনো আন্দোলনে গুলি চালাতে হলে পুলিশের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট থাকতেন। কিন্তু এখন দেখেন গুলি চালাতে কোনো অনুমতির প্রয়োজন হয় না। পুলিশ গুলি করে। তবে সব কিছু নিয়ে আমরা ভাবছি। চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলবে। তবে কখন কঠোর আন্দোলনে করতে হবে তা সময়ই বলে দেবে।