রাষ্ট্রায়ত্ত ৫ ব্যাংকের এমডির সঙ্গে গভর্নরের বৈঠক একক গ্রাহককে বড় অঙ্কের ঋণ নয়
জাফর আহমদ: রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের সুশাসন প্রশ্নে আপস না করতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহীদের (সিইও) নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রশ্নে জিরো টলারেন্স দেখাতে বলা হয়েছে। আর এসব দায়িত্ব পালনে পর্ষদকে সঙ্গে নিতে হবে। একই সঙ্গে একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বড় অঙ্কের ঋণ বিতরণ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর এমডি ও সিইওদের সঙ্গে এক বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এ নির্দেশ দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামান, ব্যাংকিং রিফর্ম উপদেষ্টা এস কে সুর চৌধুরী, সোনালী ব্যাংকের এমডি ওবায়েদুল্লাহ আল মাসুদ, জনতা ব্যাংকের এমডি আব্দুস সালাম আজাদ, অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মোহম্মদ শামস উল ইসলাম, রূপালি ব্যাংকের এমডি আতাউর রহমান প্রধান ও বেসিক ব্যাংকের এমডি মো. আউয়াল খান যোগ দেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, গভর্নর সংশ্লিষ্ট ৫ এমডিকে বলেছেন, সুশাসন নিশ্চিত করার বড় দায়িত্ব ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের। এখানে কোনো ব্যত্যয় বাংলাদেশ ব্যাংক আর মেনে নেবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোকে যেকোনো ধরনের নীতি সহায়তা দেবে।
বৈঠকে ব্যাংকগুলোর সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। সাম্প্রতিক ডলারের বাজার পরিস্থিতি, ব্যাংকগুলোর তারল্য সঙ্কট নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।
গভর্নর এমডিদের জানিয়ে দেন, রাষ্ট্র্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বড় সমস্যা হচ্ছে ঋণ। তাই গ্রাহক নির্বাচনে সতর্ক থাকতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যাপ্ত তারল্য থাকলেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সার্বিক আর্থিক সূচক নিয়ে বেঠকে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। মূলধন ঘাটতি, খেলাপি ঋণ আদায়ে মনোযোগ দিতে তাই প্রধান নির্বাহীদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, বৈঠকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর প্রতিটির জন্য আলাদা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। সাম্প্রতিককালে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বেশ কিছু ঋণ অনিয়ম বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে। এতে দেখা গেছে, একক ব্যক্তি, করপোরেট ও গ্রাহককে বড় আকারের ঋণ দিয়ে ব্যাংকগুলোর আর্থিক সূচি তৈরি করা হচ্ছে। এটি চলতে থাকলে বড় সঙ্কট হতে পারে এসব ব্যাংকের। তাই বৈঠকে লোকসানি শাখা কমিয়ে আনতে, ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ব্যবস্থা জোরদার ও খেলাপিদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সম্পাদনা: আনিস রহমান