আশা নিরাশার দোলাচলে বিএনপি
শাহানুজ্জামান টিটু ও হিরা তালুকদার: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সহসা জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন কি না তা জানতে আজ সবার নজর আদালতের দিকে। তার কারামুক্তি এখন আপিল বিভাগের আদেশের ওপর নির্ভর করছে। সরকার পক্ষ ও বিএনপি পক্ষের আইনজীবীরা এরইমধ্যে তাদের আইনগত প্রস্তুতি নিয়েছেন। তবে নেত্রীর জামিন নিয়ে আশা নিরাশার দোলাচলে বিএনপি শিবির। জামিন প্রসঙ্গে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার এম মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, বিচার বিভাগে এখন সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা আতঙ্ক বিরাজ করছে। সরকারের মনমতো রায় না দেয়ায় তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। তাই সরকারের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট মামলায় বিচারকরা সিনহা আতঙ্কে ভুগছেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন সংক্রান্ত আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় এসেছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চের আজ মঙ্গলবারের কার্যতালিকায় বিষয়টি শুনানির ৯ নম্বর ক্রমিকে রাখা হয়েছে। গতকাল সোমবার এ কার্যতালিকা প্রকাশ করা হয়।
খালেদা জিয়ার জামিন প্রসঙ্গে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সব তথ্য-উপাত্ত এবং খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিশ্লেষণ করে আজ আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখবেন এবং খালেদা জিয়া জামিনে মুক্ত হবেন।
জামিন পাবেন এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেছেন, আশা করি, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সব দিক বিবেচনা করে খালেদা জিয়াকে জামিন দেবেন।
তবে জামিন নিয়ে শঙ্কার কথা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট যদি তার মামলার জামিন নিশ্চিত করে তারপরও অন্য মামলায় শ্যোন এরেস্ট দেখানোর কারণে তার মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সরকার চাইলে তাকে নানা কারণেই জেলে আটকে রাখাতে পারেন। সুপ্রিম কোর্ট জামিন দিলে লোয়ার কোর্টে আটকে যায়। অর্থাৎ সরকার চায় না বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হোক।
দুুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, শুনানির জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। তিনি জামিন পাবেন কি না সেটা আদালতের বিষয়। খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, আপিল আবেদন ও জামিনের বিষয়ে শুনানির জন্য আমরা ইতোমধ্যে সকল প্রকার প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করছি খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিতাদেশ উঠিয়ে নিবেন আপিল বিভাগ। সব দিক বিবেচনা করে জামিন দেবেন আদালত।
গত ১৯ মার্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোটের দেয়া ৪ মাসের জামিন ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন আপিল বিভাগ।