সোহেল রহমান: আগামী বাজেটে ব্যক্তিগত আয়কর সীমা বাড়ানো হচ্ছে। কমানো হবে কর্পোরেট ট্যাক্স হার। এছাড়া মানবসম্পদ উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, স্যানিটেশন ইত্যাদি বিষয়ও বিশেষ গুরুত্ব পাবে বাজেটে। গতকাল বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ‘ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম’ (ইআরএফ)-এর সঙ্গে এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ কথা জানান। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলালসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে করপোরেট ট্যাক্স হার খুব বেশি। আগামী বাজেটে এটা কিছুটা কমানো হবে। এছাড়া বাজেটে করমুক্ত আয়সীমাও কিছুটা বাড়ানো হবে। এটি পুর্নবিন্যাস করা হবে।
প্রসঙ্গত: চলতি বাজেটে ব্যক্তিগত আয়কর সীমা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারিত রয়েছে। এছাড়া মহিলা ও ৬৫ বছর বয়স কিংবা তদুর্ধ্ব বয়সীদের ক্ষেত্রে আয়কর সীমা হচ্ছে ৩ লাখ টাকা, প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে ৪ লাখ টাকা এবং গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্বাদের ক্ষেত্রে আয়কর সীমা হচ্ছে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
ব্যক্তিগত আয়কর সীমা নির্ধারণ প্রসঙ্গে গত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে করমুক্ত আয়ের সীমা কত হওয়া উচিত Ñ তা নিয়ে প্রতিবছরই বিতর্ক ও আলোচনা হয়। করমুক্ত আয়ের সীমা নির্ধারণে একটি নীতিগত দর্শন থাকা উচিত। মাথাপিছু আয়ের অনুপাত ও মূল্যস্ফীতি Ñ এ দুটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে করমুক্ত আয়ের সীমা নির্ধারিত হতে পারে। বাংলাদেশে করমুক্ত আয়ের সীমা মাথাপিছু আয়ের ২০০ শতাংশ বেশি। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ অনুপাত ১০০ শতাংশের মধ্যে থাকে।’
সঞ্চয়পত্রের সুদের হার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা সামাজিক নিরাপত্তার অংশ হিসেবে কাজ করে। তাই বাজারে যদি কেউ সুদ ১০ শতাংশ পায়, তাহলে আমরা সঞ্চয়পত্রের সুদহার সাড়ে ১০ বা ১১ করে দেই। কিন্তু এখন পার্থক্যটা হয়ে গেছে ৭ আর সাড়ে ১১ শতাংশ।’
এ বিষয়ে আলোচনায় উপস্থিত এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘এখন আবার ব্যাংক ঋণের সুদের হার বাড়ছে। সেটা এখন প্রায় ১০ শতাংশের কাছাকাছি।’
জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তাহলে তো সঞ্চয়পত্রের সুদের হার পুনর্নির্ধারণ করার প্রয়োজন হবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাজেটে কিছু সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। কিন্তু এমপিও শুধু শিক্ষকদের জন্য হবে না। এমপিও হবে অবকাঠামোসহ বিভিন্ন উপকরণের জন্য। এজন্য আলাদা আলাদা করে বরাদ্দ রাখা হবে। এ বরাদ্দটা নির্ধারণ করবে অর্থ মন্ত্রণালয়। এছাড়া মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাকে জাতীয়করণ করা হবে এবং আগামী বাজেটে স্কুল বাস নামানোর বিষয়ে ঘোষণা থাকবে।