অবৈধ দখলদারদের কারণে মসজিদের মুসল্লিরাও অতিষ্ঠ
আলম রায়হান: অবৈধ দখলদারদের কারণে ঢাকা সদরঘাট টার্মিনাল সংলগ্ন সদরঘাট বাইতুল নাজাত জামে মসজিদের মুসল্লিরা অতিষ্ঠ ছিল। অথচ ৬ মে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সময় এই মসজিদ রক্ষার নামে সদরঘাট এলাকায় তা-ব চালানো হয়েছে। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানো এবং টার্মিনাল ভবনে ব্যাপক ভাঙচুরে প্রায় চার-পাঁচশ লোক অংশ নেয়। এ সন্ত্রাসে মো. জাবেদ হোসেন মিঠু ও ফুয়াদ হোসেন নেতৃত্ব দিয়েছে বলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সদরঘাট কেন্দ্রিক চাঁদাবাজদের একটি চক্র মসজিদকে অবলম্বন করে দীর্ঘদিন ধরে তৎপরতা চালাচ্ছিল। এদের কয়েকজন মসজিদ কমিটির নেতৃত্বও দখল করে নেয়। এদের ছত্রছায়ায় ফুটপাত দখল করে মসজিদ ঘেঁষে একাধিক স্থায়ী দোকান নির্মাণ করা হয়েছিল। এ চক্রের দখলে চলে যায় মসজিদের বিভিন্ন এলাকা। এক পর্যায়ে অবৈধ দখলদারদের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয় মসজিদ কমিটির একটি অংশ। মামলা গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। আদালত অবৈধ স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেয়। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় পুলিশের অসহযোগিতা এবং অবৈধ দখলদারদের প্রভাব কাজ করেছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। এদিকে মসজিদের উত্তর দিকের অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হলেও পশ্চিম পাশের দোকানগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন বিআইডব্লিউটিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা সদরঘাট টার্মিনাল সম্প্রসারিত হয়ে মসজিদ পর্যন্ত আসে। কিন্তু মসজিদ ঘেঁষে ফুটপাত দখল করে অবৈধ স্থাপনায় বিভিন্ন ধরনের দোকান থাকার কারণে যাত্রীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছিল। গত ১ মে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান সরকারি সফরে পটুয়াখালী যাওয়ার সময় ওয়াইজ ঘাট এলাকায় এ মসজিদের নিচের অংশ এবং ফুটপাথ দখল করে অবৈধ স্থাপনার কারণে যাত্রীদের অসুবিধার দৃশ্য দেখে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। চলমান অসুবিধা এবং আগামী ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাত্রীদের কথা বিবেচনায় রেখে দ্রুত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ বিষয়ে মাইকিং করাসহ দোকান মালিকদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকও করেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার পরিবর্তে সদরঘাট এলাকার হকারদের সংগঠিত করে চাঁদাবাজ চক্র। এদের নিয়েই উচ্ছেদ অভিযানে বাঁধা দেয়া হয়। এ সময় মসজিদ ভাঙার গুজব ছড়িয়ে টার্মিনালে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় ।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মসজিদ কমিটির নেতারা বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ফলে মুসল্লি ও যাত্রীদের দীর্ঘ দিনের ভোগান্তির অবসান হয়েছে। তবে মসজিদের বিভিন্ন স্থানে মালামাল থাকা এবং অজ্ঞাত ব্যক্তিদের অবস্থান করা সম্পর্কে মসজিদের পেশ ইমাম মো. আবদুল মোমেন বলেন, যেসব ব্যক্তিকে ভাড়া দেয়া হয়েছে তারা হয়তো অন্য কাউকে এনেছে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, দোকানগুলো নামমাত্র ভাড়া দিতো। দোকান ভাড়ার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত মসজিদের সহকারী সেক্রেটারি আব্বাস উদ্দিন আহমেদ জানান দোকানপ্রতি মাসে এক হাজার টাকা ভাড়া ছিল, কিন্তু তাও পরিশোধ করা হতো না। এদিকে একটি সূত্র জানিয়ে, কয়েকটি দোকানে চলতো মাদক ব্যবসা।