ঈদ টার্গেটে রাজধানীতে চলছে দ্বিগুণ চাঁদাবাজি
ইসমাঈল হুসাইন ইমু: রোজার শুরু থেকে রাজধানীকে বিভিন্ন সেক্টরে চাঁদাবাজি বেড়েছে। এরমধ্যে পরিবহন সেক্টরেই বেড়েছে দ্বিগুণ। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিদিন পরিবহন সংগঠনদের(জিপি) টাকার পরও সাপ্তাহিক ভিত্তিতে ট্রাফিক পুলিশকে টাকা দেওয়া হয়। রমজানের শুরুতে নতুন করে বাড়তি টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা। এছাড়া ফুটপাতের হকার থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের ব্যবসায়িরা চাঁদা আতঙ্কে রয়েছেন। ইতিমধ্যে অনেক এলাকায় চাঁদাবাজদের কর্মকান্ড শুরু হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, রাজধানীর গুলিস্তান, পল্টন, মতিঝিল, ফার্মগেট, নিউমার্কেট, মহাখালী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, খিলগাঁও তালতলাসহ রাজধানীর আরও বেশকিছু এলাকার হকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফুটপাতে চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। চাঁদা না দিলে লাইনম্যানরা পুলিশকে দিয়ে নানাভাবে অত্যাচার করে। হকাররা জানান, চাঁদা তোলার জন্য পুলিশই ‘লাইনম্যান’ নিয়োগ করে। লাইনম্যানরা চাঁদা তুলে দখলদার নেতা ও পুলিশকে বুঝিয়ে দেয়। এভাবেই চলে আসছে বছরের পর বছর।
এদিকে রাজধানীকে যানজটমুক্ত রাখার জন্য দিনের বেলায় হকারদের ফুটপাতে বসতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। সে লক্ষ্যে উচ্ছেদ অভিযানও চলছে। নিয়ম অনুযায়ী অফিস ছুটির পর হকাররা ফুটপাতে বসতে পারবে। কিন্তু সিটি করপোরেশনের অভিযানের মধ্যেই এখন সকালেই ফুটপাত দখল করে হকারদের বসতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, গুলিস্তানে ফুটপাত আছে ৩০টি। এসব ফুটপাতে হকারদের দোকান আছে প্রায় সাড়ে চার হাজার। এর মধ্যে দুই হাজার ৫০২ জন সিটি করপোরেশনের তালিকাভুক্ত। বাকিরা তালিকাভুক্ত নয় এবং অধিকাংশই রাস্তা দখল করে দোকান বসায়। এই সাড়ে চার হাজার দোকান থেকে প্রতিদিন গড়ে দেড়শ টাকা করে চাঁদা তোলা হতো। গত শুক্রবার প্রথম রোজা শুরু হওয়াতে তা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আগে প্রতিদিন এই চাঁদার পরিমাণ ছিল কমপক্ষে ছয় লাখ টাকা। দ্বিগুণ হওয়ার পর মাস শেষে চাঁদার পরিমাণ হবে প্রায় চার কোটি টাকা।
গুলিস্তান এলাকার হকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরও রমজানের শুরুতে ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে হকারদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল। এবার হয়েছে তার উল্টোটা। এবার রমজানে হকাররা বেপরোয়াভাবে ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে ফেলেছে। বাড়তি হিসেবে এবার ভ্যানগাড়ি নামানো হয়েছে। এতে করে দিনে-রাতে যানজটের ভোগান্তি লেগেই আছে।