গার্মেন্টস শিল্পে ঈদ কেন্দ্রিক ছাঁটাই আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে
জাফর আহমদ: প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদ সামনে করে তৈরি পোশাক শিল্পের বড় একটি অংশের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যে সব শ্রমিক কারখানার অভ্যান্তরে অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলে ও ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টা করেছে এবং তুলনামূলক ছোট্ট কারখানা সময় মত বেতন দিতে পারেনা-এসব কারখানার শ্রমিকরা আতঙ্কে আছে।
এ বিষয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কার্যকরি সভাপতি কাজী রুহুল আমিন বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করাসহ নানা কারণে গার্মেন্ট মালিকরা সারা বছর শ্রমিকদের চিহ্নিত করে রাখে। শ্রমিকরা রোজার শেষের দিকে যখন ঈদ আনন্দে থাকে তখন তাদের চাকরিচ্যুত করে। কিছু কিছু মালিক ঈদের আগে টাকা না দিয়েই বিদেশ পাড়ি জমায় তখন শ্রমিকরা বেতন-ভাতার জন্য বিক্ষোভ করে। তুলনামূলক ছোট্ট কারখানা ও ম্যানুয়াল সোয়েটার কারখানা এ ধরনের অনিয়ম করে। আমরা চাই ২০ রোজার মধ্যেই এক ব্যাসিকের সমান ঈদ বোনাস ও ঈদের আগে জুন মাসের ১৫ দিনের মজুরি পরিশোধ করতে হবে।
শ্রমিক সুত্রগুলো জানায়, এবার শ্রমিকদের মধ্যে মূল বেতন নিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে। কারণ জুন মাসের মাঝামাছি ঈদ হবে। ততদিন আগের মাসের বেতন শেষ হয়ে যাবে। তখন হাতে থাকবে ঈদ বোনাসের কিছু টাকা। যে সব কারখানা নামেমাত্র ঈদ বোনাস দেবে সে সব কারখানার শ্রমিকরা আরও বেশি সমস্যায় পড়তে পারে। শ্রমিকদের সাথে কথা বলে উদ্যেক্তারা স্ব স্ব কারখানার সমস্যা সমাধান করবে বলে তারা আশা করছে শ্রমিক নেতারা।
প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদের আগে রাজধানীর আশেপাশেসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের আশঙ্কা করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে এবছর আগেভাগেই তা আমলে নিয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই তৈরি পোশাক কারখানা অধ্যুষিত এলাকা ঢাকার আশুলিয়া, টঙ্গী, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রামে নজরদারি বাড়িয়েছে বলে একটি গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে। সুত্রটি জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ঢাকার আশুলিয়া ও টঙ্গীতে এ ধরনের কয়েকটি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের আশঙ্কা উল্লেখ করেছে।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, কিছু কারখানায় ছোটখাটো সমস্যা হয়তো থাকতে পারে। তবে যতো সদস্যাই থাকুক ঈদের আগে তা সমাধান করা হবে। আশা করছি এবছরও কোনও গার্মেন্টস কারখানায় বেতন বোনাসের দাবিতে শ্রমিক অসন্তোষ হবে না।