জাফর আহমদ: আগামী অর্থবছরে বাজেটে কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে ন্যায্যমূল্য কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন ১২টি কৃষক সংগঠন। উপকূলীয় এলাকার কৃষি জমি রক্ষার জন্য স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য বাজেট বরাদ্দ রাখারও দাবি জানায়। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনগুলো এ দাবি জানায়।
কোস্ট ট্রাস্টের মোস্তফা কামাল আকন্দের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকদের পক্ষ থেকে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ফার্মার্স ফোরামের সচিবালয় সমন্বয়কারী মো. মজিবুল হক মনির। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ, উপকূলীয় কৃষক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মো. শহাবুদ্দিন, গ্রাম উন্নয়ন সংস্থার প্রধান শামসুজ্জামান খোকন প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে মো. মজিবুল হক মনির বলেন, দেশের মোট শ্রমশক্তির প্রায় ৪৬ শতাংশ কৃষিতে সম্পৃক্ত, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নির্ভর করে এই খাতের ওপর, তাই এ খাতে মোট বাজেটের কমপক্ষে ২০ শতাংশ বরাদ্দ থাকা উচিত। প্রতি বছর বাজেটের মূল আকার বাড়লেও, সে অনুপাতে কৃষির জন্য বরাদ্দ বাড়ছে না।
২০১৭-১৮ সালের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের তুলনায় বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ, অথচ কৃষির জন্য বরাদ্দ গত অর্থ বছরের তুলনায় কমানো হয়েছে ০.৮১ শতাংশ! ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কৃষিখাতে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৪.০১ শতাংশ , ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের জন্য এখাতে বরাদ্দ মাত্র ৩.৪ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছরে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্ধ ছিল মোটবাজেটের ৮.৪৪ শতাংশ, আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ২.২ শতাংশ ছিল এই মন্ত্রণালয়টির জন্য। ২০১৭-১৮ সালে বাজেটের মাত্র ৩.১২ শতাংশ বরাদ্দ। রাখা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রণালয়টির জন্য। অন্যদিকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে কৃষির জন্য বরাদ্দ মাত্র ১.২ শতাংশ।
আব্দুল মজিদ বলেন, বীজের ওপর কৃষকের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিদেশি কোম্পানিগুলোর ওপর নির্ভরতা আমাদের কমাতে হবে, ভালো মানের বীজ দেশেই উৎপাদন সম্ভব। এ জন্য সরকারের প্রতিষ্ঠান বিএডিসিকে শক্তিশালী করতে হবে। এর জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, কৃষকের জন্য ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হলে, ধান-চাল সংগ্রহ নীতিমালা পরিবর্তন করতে হবে। কৃষক তার কাছে ধান আসার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বিক্রি করে দেন। মধ্যস্বত্বভোগীরা সেই ধান কিনে চাল বানিয়ে বিক্রি করে মুনাফা লুটে। সম্পাদনা: আনিস রহমান