ঈদ মৌসুমে এবার দর্জিদের মুখ ভার
রকু আমির: তৈরি পোশাকের আধিপত্য এবং বেশি মজুরির প্রভাবে ঢাকার দর্জিদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন অনেকেই। তাই এই ঈদুল ফিতর মৌসুমে দর্জিদের মুখ ভার।
রমজান মাসের ২২তম দিনে গতকাল শুক্রবার ঢাকার নিউ মার্কেট, গাউসিয়া, চাঁদনি চক, ফার্মগেইট ও মিরপুরের বিভিন্ন দর্জিবাড়ি ঘুরে এমন তথ্যই জানা যায়।
গাউসিয়া মার্কেটের শতরূপা লেডিস টেইলার্সের কাটিং মাস্টার শ্যামল বলেন, কাজ আছে, কিন্তু বেমানান। অন্যবার ঈদে কাজের বাড়তি চাপ থাকায় ১০ রোজার পরে অর্ডার না নিলেও এবার তেমন কাজের চাপ না থাকায় এখনও অর্ডার নিচ্ছি।
বসুন্ধরা সিটিতে জিন্স প্যান্ট ক্রেতা ইমরান বলেন, দর্জি দোকানে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছি ৪-৫ বছর হয়েছে। কাপড় ক্রয়, মজুরি দিয়ে খরচ অনেক বেড়ে যায়। চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন যা করে দেখে মন ভরে না। তার চেয়ে রেডি পোশাকই সেরা। মিরপুর মণিপুরের লুবনা টেইলার্সের কাস্টমার বিথী বলেন, সুতি কামিজের মজুরি দিতে হয় ৪০০ টাকা। আর একটু ডিজাইন দিলেই ৫০০-৬০০ টাকা মজুরি। এক হাজার টাকার একটা ড্রেসে মজুরিই লেগে যায় ৫০০-৬০০ টাকা আবার সেটা মন মতো হয় না। বানাব কী করে? এ কারণেই রেডিমেড কাপড় কিনে ফেলি।
অন্যদিকে, কাজ কম পাওয়ার পেছনে চাকরিজীবীদের দেরিতে বেতন ও বোনাস পাওয়াকেও মনে করছেন দর্জিরা।
গাউসিয়া মার্কেটের পাশের ইসমাইল ম্যানশনের তৃতীয় তলার একটি দোকানের দর্জি সিরাজ জানান, বেতন বোনাস পেতে দেরি হওয়ায় অর্ডার আসছে দেরিতে এবং ডেলিভারি পেতে দেরি হবার আশঙ্কায় অনেকে তৈরি পোশাকের দিকে ঝুঁকেছেন।
মিরপুর ১ নম্বর এলাকার ইসলাম টেইলার্সের কাটিং মাস্টার সাইফউদ্দিন জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ঈদে কম কাজ পেয়েছেন তারা। অন্যান্য বার এই সময়ে তো আমাদের দম ফেলার সময় থাকে না। আর এইবার কাজ কম পাওয়ায় এখনও অর্ডার নিচ্ছে।
মজুরি বেশির বিষয়ে রমনা টেইলার্সের কর্মী মাসুদ বলেন, সব কিছুরই দাম বেড়েছে। কারিগরদের মজুরি, কারেন্ট বিল, দোকান ভাড়াসহ আনুষঙ্গিক সবকিছু। মজুরি কী আগের মতো রাখা সম্ভব? সম্পাদনা: আনিস রহমান