টর্নেডো কেড়ে নিয়েছে রাঙ্গাবালীর ৩ গ্রামের ঈদ আনন্দ
রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ের তা-বে অর্ধশতাধিক বসতঘর ও গাছপালা বিধ্বস্ত হয়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ১১ জুন রাতের আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের চতলাখালী, তিল্লা ও নয়াভাঙ্গুনী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা দিনের বেলায় নিজেদের বিলীন হয়ে যাওয়া ভিটা বাড়িতে পলিথিন, তেরপাল অথবা ঘূর্ণিঝরে বিলীন হওয়া খরকুটার মাধ্যমে ছাউনি দেওয়া ঘরে অবস্থান করলেও বৃষ্টির পানি ও অজানা বিপদের আশঙ্কা নিয়েও অতিকষ্টে রাত পার করছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য মতে, সোমবার রাতের ৫০ সেকেন্ডের ঘূর্ণিঝড়ের তা-বে উপজেলায় ১৩টি পরিবার স¤পূর্ণ বিধ্বস্ত এবং ৪২ পরিবার আংশিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। বর্তমান রমজান মাসে টানা বৃষ্টির পানির কারণে অনেক পরিবারে ঠিকমত ইফতার অথবা সেহরী খাবার সুযোগটুকুও হয় না বলে জানান ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের চতলাখালী, তিল্লা ও নয়াভাঙ্গুনী গ্রামের ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত পরিবার গুলো। তারা এখনো পর্যন্ত স্থায়ী ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে না পারায় ঝড় বৃষ্টিতে নানা ভোগান্তির মাধ্যমে দিনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। গতকাল বুধবার সরেজমিনে ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের চতলাখালী, তিল্লা ও নয়াভাঙ্গুনী এলাকা পরিদর্শন করে এমনটাই দেখা গেছে। ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, ঘরহীন যেখানে নিয়মিত বৃষ্টির কারণে বাড়িতে অবস্থান করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে সেখানে ঈদের আনন্দ কিসের ! গৃহিনী ডালিমা বেগম (৩০)বলেন ঘূর্ণিঝড়ে বাড়িঘর নিয়ে জাওয়ার পর অনেক কষ্টে পলিথিন ঘেরা বেড়া দিয়ে কোনরকমে জীবনযাপনন করছি। প্রতিদিন বৃষ্টির পানির কারণে খাবার গ্রহন করাটাই দায় হয়ে যাচ্ছে। ঈদের জামা কাপড় কীভাবে কিনব। আমাদের কাছে ঈদের একদিনের আনন্দের চেয়ে জীবনে বেঁচে থাকার গুরুত্ব অনেক বেশি ।
ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম আব্দুল মান্নান জানান, ৫০ সেকেন্ডের টর্নেডোর তান্ডবে ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের ৩ গ্রাম ল-ভ- হয়ে গেছে। ঈদের আনন্দ এই ইউনিয়নে নেই।
রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) তপন কুমার ঘোষ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে তালিকা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে- নগদ দুই হাজার টাকা, ৩০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি সেমাই, ১ কেজি চিনি, দু’শ পঞ্চাশ গ্রাম গুড়ো দুধ, ২টি শাড়ি, ২টি লুঙ্গি ঈদ সামগ্রী হিসেবে ১৩টি পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।