আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে আলোচনার আয়োজন করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত
সাউথএশিয়ান মনিটর : তালেবানদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় যোগ দিতে এখনো রাজি হয়নি যুক্তরাষ্ট্র। তবে, আফগান সরকার ও তালেবানদের মধ্যে তিন দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর দেশটিতে শান্তি স্থাপনের সম্ভাবনার ব্যাপারে ওয়াশিংটনকে যথেষ্ঠ আশাবাদি বলে মনে হচ্ছে।
শুধু ঈদের তিন দিন দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর ছিলো। রোববার যুদ্ধবিরতির সময়সীমা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তালেবানরা অস্ত্র হাতে তুলে নেয়।
প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি যুদ্ধবিরতির সময়সীমা ১০ দিন বাড়ালেও তালেবানরা এতে সাড়া দেয়নি। বরং সারাদেশে হামলা চালানোর মাধ্যমে এর জবাব দিচ্ছে। তবে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সিপ্যাল ডেপুটি এসিসট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট এলিস ওয়েলস মার্কিন কংগ্রেসের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সদস্যদের বলেন যে বিদ্রোহী গ্রুপটি সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় সহায়তা দিতে ওয়াশিংটন প্রস্তুত।
তিনি বলেন, আফগান সরকার ও তালেবানদের মধ্যে সরাসরি আলোচনায় সমর্থন ও সহায়তা প্রদান এবং অংশগ্রহণ করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত। সংঘাত নিরসন এবং আফগানিস্তান যেন আর কখনো সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর নিরাপদ আশ্রয়ভূমিতে পরিণত না হয় তা নিশ্চিত করতে আলোচনার মাধ্যমে সর্বসম্মত একটি সমাধানে পৌছাতে আমরা সকল অংশীজনকে সমর্থন দেবো।’
ওয়েলস বলেন, ১৬ বছর যুদ্ধের পর আমরা এ বছরেই আফগান শান্তি প্রক্রিয়া শুরুর একটি সত্যিকারের সুযোগ দেখতে পেয়েছি, যা সংঘাতের স্থায়ী নিস্পত্তি করতে পারে। তিনি তালেবানদের প্রতি সহিংসতা পরিহার এবং আল-কায়দার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে আফগানিস্তানের সংবিধান মেনে নেয়ার আহ্বান জানান। ওয়াশিংটনে একটি আলোচক গ্রুপ গঠন করা হয়েছে বলে ওয়েলস জানান। এই গ্রুপটি কাবুলে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সঙ্গে কাজ করবে। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে তালেবানদের শীর্ষ নেতারা পাকিস্তানে অবস্থান করছেন। ফলে আফগান যুদ্ধের দৈনন্দিন চাপ থেকে তারা মুক্ত রয়েছেন।
আফগানিস্তানের প্রতিবেশি দেশগুলো, বিশেষ করে পাকিস্তানের প্রতি শান্তি প্রক্রিয়া সমর্থনের জন্য বাড়তি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান ওয়েলস।
তিনি বলেন, কিছু ইতিবাচক লক্ষণ সত্ত্বেও আমরা পাকিস্তানের কাছ থেকে টেকসই ও চূড়ান্ত কোন পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। তবে যুক্তরাষ্ট্র কেন তালেবানদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছে না সেই প্রশ্ন রাখেন প্যানেলের শীর্ষ ডেমক্রেট নিউ ইয়র্কের এলিওট এনজেল। তিনি বলেন, ‘আমরা যেখানে উত্তর কোরিয়ার নেতা কি জং উনের সঙ্গে আলোচনা করছি সেখানে তালেবানদের সঙ্গেও আলোচনা করতে পারি।’
এদিকে, তালেবানদের শান্তি আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসতে সামরিক চাপ গুরুত্বপূর্ণ উপদান বলে এখনো মনে করছে আফগানিস্তানে নিযুক্ত ন্যাটো বাহিনী।
দেশটিতে ন্যাটোর রেজুলেট সাপোর্ট মিশনের নতুন ডেপুটি কমান্ডার লে. জেনারেল রিচার্ড ক্রিপওয়েল বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির মতো আমরাও মনে করি তিনটি চাপ তালেবানদের শেষ পর্যন্ত আলোচনার টেবিলে আনবে। নির্বাচনের প্রাক্কালে সামাজিক চাপ বাড়ছে; ন্যাটো, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক চাপ দেয়া হচ্ছে; এবং সর্বশেষে রয়েছে সামরিক চাপ।’ সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ