শেয়ার কেলেঙ্কারীর দায়ে মার্কের তিন কর্মকর্তাকে ৫ বছরের জেল
ফয়সাল মেহেদী: বহুল আলোচিত মার্ক বাংলাদেশ শিল্প অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির শেয়ার কেলেঙ্কারীর ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির তিন কর্মকর্তাকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন শেয়ারবাজার সংক্রান্ত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে মার্ক বাংলাদেশ কোম্পানি ও তিন আসামিকে ৫০ লাখ টাকা করে মোট ২ কোটি টাকার অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে। ২৪ জুন, রোববার এই জেল-জরিমানার রায় ঘোষণা করেছেন ট্রাইবুন্যালের বিচারক আকবর আলী শেখ।
১৯৯৯ সালে শেয়ার কারসাজির দায়ে মার্ক বাংলাদেশ শিল্প অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিসহ ৪ জনকে আসামি করে মামলাটি করা হয় ২০০০ সালে। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিএসইসি) পক্ষে সিকিউরিটিজ অধ্যাদেশ এর ২৫ ধারায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে মামলাটি দায়ের করেন বিএসইসির তৎকালীন উপপরিচালক আহমেদ হোসেন। এ মামলায় মার্ক বাংলাদেশ শিল্প অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমাম মুলকুতুর রহমান, ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল হাই ও পরিচালক সালমা আক্তারকে আসামি করা হয়। দীর্ঘদিন বিচার কার্যক্রম স্থগিত থাকার পর ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর মামলাটি বিশেষ ট্রাইব্যুনালে আসে। ফলে সিএমএম আদালতের ১৩৬৪/২০০০ নম্বরের মামলাটির নতুন নম্বর দেওয়া হয় ৩/১৬। আসামিদের মধ্যে ইমাম মুলকুতুর রহমান ইতিমধ্যে মারা গেছেন এবং বাকীরা মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন। পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা হয়েছে, আসামিদের গ্রেফতার বা তাদের আত্মসমর্পণের দিন থেকে কারাদন্ডের হিসাব শুরু হবে। এছাড়া আর্থিক জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলে অতিরিক্ত আরও ৬ মাস কারাভোগ করতে হবে আসামিদের। প্রসঙ্গত, আসামি ইমাম মুলকুতুর মারা গেলেও ট্রাইবুন্যাল তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানে না। যে কারণে তাকেও জেল এবং জরিমানা করা হয়েছে।
রায়ে বিচারক বলেন, অভিযুক্তরা যোগসাজশে লাভবান হয়েছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তারা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর ১৭ ধারার (ই) (২) উপ-ধারা লঙ্ঘন করেছেন। যা একই অধ্যাদেশের ২৪ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এর আগে বিচার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ট্রাইব্যুনালে এ মামলায় সাক্ষ্য দেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. এম.এ রশীদ সরকার, বুয়েটের অধ্যাপক ড. মাহমুদ হেলালী, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহুরুল হক, বিএসইসির নির্বাহি পরিচালন এটিএম তারিকুজ্জামান, বিএসইসির আরেক নির্বাহি পরিচালক ফরহাদ আহমেদ, বিএসইসির উপ-পরিচালক এএসএম মাহমুদুল হাসান ও সাবেক উপ-পরিচালক শুভ্রকান্তি চৌধুরী প্রমুখ। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ১২ জুন মামলাটিতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের দিন ঘোষণা করা হয়।