আগামী বছরের এপ্রিল থেকে পরবর্তী কৃষিশুমারির শুরু হবে: বিবিএস
সাইদ রিপন: আগামী বছরের এপ্রিল থেকে পরবর্তী কৃষি ( শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারির কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বিভাগ (বিবিএস)। পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ অনুযায়ী জনশুমারি এবং অর্থনৈতিক শুমারির পাশাপাশি কৃষি শুমারি পরিচালনা করার ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই দেশে পঞ্চমবারের মতো এ শুমারি পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
গতকাল আগারগাঁওয়ের বিবিএস ভবনে ‘কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি-২০১৮ শীর্ষক’ এর প্রস্তুতিমূলক কর্মকান্ডের ওপর প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) বিকাশ কিশোর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএসের মহাপরিচালক আমীর হোসেন।
কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারির প্রকল্প পরিচালক জাফর আহাম্মদ খান পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে কৃষি শুমারির পটভূমি, উদ্দেশ্য, শুমারির পরিধি, প্রশ্নপত্রের ধরণ এবং প্রকল্প সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যাদি উপস্থাপন করেন। তিনি জানান আগামী ২০১৯ সালের এপ্রিল-মে মাসের মধ্যে শুমারির তথ্য সংগ্রহ কাজ সম্পন্ন করা হবে। এর মাধ্যমে দেশের সকল খানা এবং কৃষি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান হতে তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
তিনি আরো বলেন, জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে কৃষি খাতের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামীন জীবনে দারিদ্র দূরীকরণ জাতীয় পরিকল্পনার অন্যতম উদ্দেশ্য, যা কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নের মাধ্যমে অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। এজন্য ৩৪৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরে একটি প্রকল্প কাজ শুরু করেছে। ২০১৭ সালের মে মাস হতে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এ শুমারির কার্যক্রম চলবে।
জানা গেছে, কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি পরিচালনার মাধ্যমে কৃষি খানার সংখ্যা, খানার আকার, ভূমির ব্যবহার, শস্যের ধরণ, জমি চাষের প্রকার, চাষ পদ্ধতি, গবাদি পশু ও হুাঁস-মুরগীর সংখ্যা, মৎস্য চাষের বিভিন্ন তথ্যাদি এবং এ সকল কর্মকান্ডে নিয়োজিত জনবল সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে। এ ধরণের তথ্য কৃষি ক্ষেত্রের উন্নয়ন কৌশল নির্ধারণ এবং অগ্রগতি পর্যাবেক্ষণে বেঞ্চমার্ক তথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ৬টি প্রধান ফসল এবং ১১৮ টি অপ্রধান ফসলের আয়তন, ফলন ও উৎপাদনের হিসাব প্রাক্কলন করে থাকে। বিবিএস বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সহযোগিতায় সারা দেশে শহর ও গ্রামে কৃষি শুমারি পরিচালনা করে আসছে। স্বাধীন বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যথাক্রমে ১৯৭৭, ১৯৮৩-৮৪, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে মোট ৪ বার কৃষি শুমারি পরিচালনা করা হয়েছে। এটা দেশব্যাপি বৃহৎ আকারে পরিচালিত একটি পরিসংখ্যানিক কার্যক্রম। প্রতি দশ বছর অন্তর অন্তর কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়।
বিবিএসের সচিব বলেন, সরকার থেকে শুরু করে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, এনজিও, গবেষণা সংস্থা, কৃষি বিষয়ক সংস্থাসমূহ প্রভৃতির পরিকল্পনা প্রণয়নের ও নীতি নির্ধারণের জন্য হালনাগাদ কৃষি বিষয়ক তথ্য-উপাত্ত প্রাপ্তির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সরকারের নীতিনির্ধারণ ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণে কৃষি জমির পরিমাণ, জমির ব্যবহার, কৃষক, শস্য উৎপাদন, মৎস্য উৎপাদন এবং প্রাণিসম্পদ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা প্রধানত কৃষি শুমারির মাধ্যমেই পাওয়া যায়।