বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির তদন্ত রিপোর্ট চেয়েছে ফিলিপাইন
বিশ্বজিৎ দত্ত: বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির তদন্ত রিপোর্ট চেয়েছে ফিলিপাইন সরকার। এটি তাদের দ্বিতীয়বারের মতো তদন্ত রিপোর্ট চাওয়া। গত জানুয়ারিতে ফিলিপাইন প্রথমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি যাওয়ার তথ্য চেয়েছিল। বাংলাদেশ সরকার রিজার্ভ চুরির কোনো তথ্যই এখন পর্যন্ত ফিলিপাইন সরকারকে দেয়নি।
গত সপ্তাহে ফিলিপাইনের অর্থ-সচিব,কার্লোস ডি ডোমিংগোজ বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রীকে লিখেন, ফিলিপাইন সরকার রিজাল কমার্সিয়াল ব্যাংকের(আরসিবিসি) বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে। এই মামলার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া অর্থের তদন্ত রিপোর্ট প্রয়োজন। কারণ ফিলিপাইন সরকার নিশ্চিত হতে চায় যে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির সঙ্গে রিজাল ব্যাংকের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
গত মে মাসে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) বার্ষিক সধারণ সভার সাইড লাইনে সে দেশের অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন বাংলাদেশের চুরি যাওয়া অর্থের বিষয়ে ফিলিপাইন সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার। এর প্রেক্ষিতেই ফিলিপাইন দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশের কাছে অর্থ চুরির তদন্ত রিপোর্ট চেয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি যায়। পরে ২০ মিলিয়ন ডলার শ্রীলংকা থেকে ও ফিলিপাইনের একটি ক্যাসিনো থেকে ১৫ মিলিয়ন ডলার উদ্ধার করা হয়। এখন পর্যন্ত ৬৬ মিলিয়ন ডলার উদ্ধার করা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ, বাংলাদেশ সরকার সুইফট কর্তৃপক্ষ মিলিতভাবে রিজার্ভ চুরির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে একটি মামলা করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, আসলে আমরা চেষ্টা করছি আউট অব কোর্ট রিজার্ভ চুরির বিষয়টি মীমাংসা করতে। ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ ফিলিপাইনের ক্যাসিনোতে ব্যয় হয়েছে। এই তথ্য আমাদের কাছে আছে। রিজার্ভ চুরির ১ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল সরকার। কমিটি ১ মাসের মধ্যে তাদের রিপোর্ট দিলেও রিপোর্টটি আর প্রকাশ করা হয়নি। বাংলাদেশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টম্যান্টও বিষয়টির তদন্ত করছে। কিন্তু তারাও এখন পর্যন্ত অর্থ চুরির বিষয়ে কোনো তদন্ত রিপোর্ট দিতে পারেনি।