রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানে মজুরি বাড়লো শতভাগ
আনিসুর রহমান তপন: পণ্য উৎপাদনশীল রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকের আগের তুলনায় প্রায় শতভাগ বাড়িয়ে নতুন ‘মজুরি স্কেল-২০১৫’ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার তেজগাঁওস্থ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বেতন দ্বিগুন করা সংক্রান্ত আইনের খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আইনটি নীতিগত অনুমোদন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, বৈঠকে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের মজুরি-স্কেল ও ভাতা অনুমোদন এবং পণ্য উৎপাদনশীল রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্রমিক (চাকরির শর্তাবলী) আইন ২০১৮’র খসড়া নীতিগত অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন ২০১৫’র সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের বেতন দ্বিগুণ করে এই আইনটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আগের তুলনায় প্রায় শতভাগ বাড়িয়ে নতুন ‘মজুরি স্কেল-২০১৫’ করা হয়েছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, নতুন মজুরি ২০১৫ সালের ১ জুলাই ও ভাতা ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। এতে ১৬টি গ্রেড রয়েছে বলেও জানান সচিব।
এর আগে ‘জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন ২০১০’এ রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়িয়েছিল। ওই সময় সর্বোচ্চ মজুরি ৫ হাজার ৬০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৪ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করেছিল সরকার।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই আইনে কমিশন মজুরি-স্কেল ২০১০ এর তুলনায় ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি এবং বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশ হারে বাড়ানোর সুপারিশ করে। সুপারিশ অনুযায়ী, সর্বনিম্ন বেতন স্কেল ৪ হাজার ১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ হাজার ৩০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন স্কেল ৫ হাজার ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১ হাজার ২০০ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছিল। মজুরি কাঠামোর ২০১০ সালের মতো ২০১৫ সালে করা সুপারিশেও মূল মজুরির ৫০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ২০০ টাকা, ধোলাই ভাতা ১০০ টাকা, উৎসব ভাতা দুই মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ, ছুটি নগদায়নে বাৎসরিক অর্জিত ছুটির ৫০ শতাংশ, ফান্ড মূল বেতনের ১০ শতাংশ, টিফিন ভাতা ২০০ টাকা, ২০ শতাংশ হারে নববর্ষ ভাতা, ঝুঁকি ভাতা ৪০০ টাকা, শিক্ষা সহায়তা ভাতা ৫০০ টাকা রাখা হয়েছে। আর নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস করা হয়েছে।