নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুতে ব্যয় ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা
সাইদ রিপন: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পদ্মা সেতুসহ মেগা প্রকল্পগুলো দৃশ্যমান করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে সরকার। ইতোমধ্যেই কিছুটা হলেও বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প দৃশ্যমান হয়েছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো প্রকল্পগুলো এখন আর স্বপ্ন নয় বাস্তবে দৃশ্যমান হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে এগুলোর বাস্তব অগ্রগতি প্রতিমাসেই খতিয়ে দেখছে তার কার্যালয়। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের প্রকল্প হচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের ঋণ দেয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত নিজস্ব অর্থায়নেই বাস্তবায়ন করছে সরকার। এখন পর্যন্ত এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৫৫ দশমিক ৬ শতাংশ যা টাকার অংকে ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে সেতু বিভাগের উপ-পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আবুল হোসেন বলেছেন, স্বপ্নের এ প্রকল্পটি সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই এ সেতুটির ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর জাজিরা পয়েন্টের ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়েই দৃশ্যমান হয় সেতুটি। এরপর এ বছরের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর খুঁটিতে বসানো হয় দ্বিতীয় স্প্যান। গত ১১ মার্চে ৩৯ ও ৪০ নম্বর খুঁটির ওপর বসে তৃতীয় স্প্যান। সর্বশেষ ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর খুঁটির ওপর চতুর্থ স্প্যান বসানো হলে সেতুর ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে প্রকল্পটির বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ৫৫ শতাংশ। পানি ও মাটির নীচে প্রকল্পটির সর্বমোট পিলার থাকবে ২৬২টি। এখন পর্যন্ত ১৫০টি পিলারের কাজ সমাপ্ত হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামোর নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ পর্যন্ত প্রকল্পের প্রায় ৫৬ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ এ সেতুতে দৃশ্যমান মোট ৪২টি পিলার থাকবে। এর মধ্যে ৪০টি পিলার নির্মাণ করা হবে নদীতে। দুটি নদীর তীরে। নদীতে নির্মাণ করা প্রতিটি পিলারে ৬টি করে পাইলিং করা হয়েছে, যার দৈর্ঘ্য গড়ে প্রায় ১২৭ মিটার পর্যন্ত। একটি পিলার থেকে আরেকটি পিলারের দূরত্ব ১৫০ মিটার। এ সেতুতে ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার।
প্রসঙ্গত, দ্বিতলবিশিষ্ট পদ্মা সেতু হচ্ছে, মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যে। বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকায় প্রকল্পটি অনুমোদন করেছিল। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। বর্তমানে প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। সম্পাদনা: মোহাম্মদ রকিব হোসেন