স্কটল্যান্ডে ট্রাম্পের গল্ফ রিসোর্টকে ৭৭ হাজার ডলার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
শিমুল জাবালি: স্কটল্যান্ডে নিজের মালিকানাধীন গল্ফ রিসোর্টে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থানের আগে প্রতিষ্ঠানটিকে ৭৭ হাজার ডলারেরও বেশি অর্থ পরিশোধ করেছে মার্কিন সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয়ের রেকর্ড থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইউরোপে ট্রাম্পের সরকারি সফরেও সম্ভবত তার ব্যবসা সা¤্রাজ্য লাভ তুলে নিয়েছে, অর্থ পরিশোধের এ তথ্য এমন ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে। ব্যয়ের রেকর্ড দেখার কথা জানিয়ে রয়টার্স বলেছে, এপ্রিল থেকে ট্রাম্পের সফরের আগ পর্যন্ত মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসএলসি টার্নবেরি লিমিটেডকে ‘ভিআইপি সফরে ব্যবহৃত হোটেল রুমের’ জন্য ৭৭,৩৪৫.৩৫ ডলার পরিশোধ করেছে। স্কটল্যান্ডের ওই রিসোর্টটি ট্রাম্পের কোম্পানি এসএলসি টার্নবেরি লিমিটেডের অধীনে আছে আর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাধারণত প্রেসিডেন্টের বিদেশ ভ্রমণের ব্যবস্থাপনার দিকটি দেখে থাকে। ওই অর্থ পরিশোধের কথা প্রথম প্রকাশ পায় ‘স্কচম্যান’ নামের একটি স্কটিশ সংবাদপত্র ও ওয়েবসাইটে।
নেটো জোটের মিত্রদের সঙ্গে বৈঠকের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের আগে গত শনিবার ট্রাম্প ওই রিসোর্টটিতে অবস্থান করে সেখানে গল্ফ খেলেন। তবে অর্থের পুরোটা গল্ফ রিসোর্টটিতে ট্রাম্পের অবস্থানের ব্যয় হিসেবে পরিশোধ করা হয়েছে কি না তা পরিষ্কার নয়। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এপ্রিলে টার্নবেরিকে ৭,৬৭০ ডলার পরিশোধ করেছিল, এরপর ট্রাম্পের সফরের কয়েকদিন আগে গত সপ্তাহে আরও ৭০,০০০ ডলার পরিশোধ করে।
এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এবং বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যের জন্য হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের অনুরোধ করা হলেও তারা সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। সাবেক সরকারের নীতি বিষয়ক কর্মকর্তারা ও পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীগুলোর অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের তৎপরতার মাধ্যমে তিনি সরাসরি ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হচ্ছেন না এটি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক অন্যান্য প্রেসিডেন্টরা তাদের সম্পদ ট্রাস্টের কাছে ছেড়ে দিলেও ট্রাম্প নিজের হোটেল ব্যবসা, গল্ফ কোর্স ও অন্যান্য ব্যবসার মালিকানা ধরে রেখেছেন। ২০১৭-র জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার অল্প আগে নিজের ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ছেলের হাতে হস্তান্তর করেন তিনি। সাম্প্রতিক অন্যান্য প্রেসিডেন্টরা যা করেননি তিনি তাও করেছেন, নিজের ট্যাক্স রিটার্ন প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। নথিপত্রে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার সময় ট্রাম্প টার্নবেরির পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন, কিন্তু মালিকানার একটি অংশ ধরে রেখেছিলেন। গত বছর মালিকানার ওই শেয়ার থেকে তিনি দুই কোটি ৪০ লাখ ডলার আয় করেছিলেন বলে মে মাসে প্রকাশিত তার আর্থিক নথিপত্রে দেখা গেছে।
এরিক ট্রাম্প, যিনি তার ভাই ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের সঙ্গে টার্নবেরির পরিচালক হিসেবে আছেন, লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের কাজকর্ম থেকে কোনো লাভ করে না ট্রাম্প প্রোপারর্টিজ। টুইটারে তিনি লিখেছেন, “দরকার না হলেও আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কোনো ইভেন্ট থেকে আমরা কোনো লাভ করবো না, শুধু খরচ বাবদ বিল নিবো। তারা যদি অন্য কোথাও অবস্থান করতো তাহলে আরও অনেক বেশি খরচ হতো।”