তরিকুল ইসলাম সুমন: ২১ সালের মধ্যে দেশে অভ্যন্তরীণ মৎস্য উৎপাদন ৪৫ লাখ টনে উন্নীতকরণে কাজ করছে সরকার। এ ছাড়াও যাতে করে ছোট ছোট খামারিরা আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারে সে বিষয়টি নজরে রেখে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। গতকাল মৎস্য অধিদপ্তরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৮ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের সংস্থা এফএও’র সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৮ সালে অভ্যন্তরীণ মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে ৩য় অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। অথচ ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই অবস্থান ছিল পঞ্চম। চীন ও ভারতের পরই এখন বাংলাদেশের অবস্থান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইকোনমিক রিভিউ অনুযায়ী বাংলাদেশের জিডিপিতে মৎস্যখাতের অবদান এখন ৩.৫৭ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপিতে এ খাতের অবদান ২৫.৩০ শতাংশ। আর দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ১১ শতাংশের অধিক লোক মৎস্য আহরণে জড়িত। ২০১৭-১৮ সালে দেশ প্রায় ৬৯ হাজার মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করেছে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন হওয়ায় দেশের জনগণ এখন জনপ্রতি গড়ে ৬২.৫৮ গ্রাম মৎস্য গ্রহণ করছে, যদিও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, জনপ্রতি দরকার মাত্র ৬০ গ্রাম। জাটকা নিধনরোধের কার্যকারিতায় ব্যাপক ইলিশ উৎপাদনের কারণে ২০১৭-১৮ সালে প্রায় ৫ লাখ টন ইলিশ উৎপাদিত হয়েছে, ২০০৮-০৯ সালে যা ছিল প্রায় ৩ লাখ টন।
তিনি বলেন, ২০১৬-১৭ সালে প্রায় ৪২ লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের মাধ্যমে দেশ মাছে স্বয়ম্ভরতা অর্জন করেছে, যা আমাদের ধরে রাখতে হবে। সারাবিশ্বে একমাত্র বাংলাদেশি মাছ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে ইলিশ মাছের এও সনদপ্রাপ্তির কথা উল্লেখ করেন।
জাটকা নিধন রোধে সহায়তা করায় ২০১৭-১৮ সালে প্রায় আড়াই লাখ জেলেপরিবারকে ৪০ কেজি হারে ৪ মাসে প্রায় ৪০ হাজার টন খাদ্য সহায়তা এবং ২২দিন পর্যন্ত মা-ইলিশ আহরণ বন্ধ রাখায় বিগত ২ বছরে প্রায় ৪ লাখ জেলেপরিবারকে প্রায় ১৫ হাজার টন ভিজিএফ দেয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী বলেন, জরিপ জাহাজ আরভিমীন সন্ধানীর মাধ্যমে সমুদ্র জরিপ করে ইতোমধ্যে আমাদের সমুদ্রসীমায় ২৯৮ প্রজাতির মাছ, ২৩ প্রজাতির চিংড়ি মাছ, ১৬ প্রজাতির ক্রাস্টেপিয়ান ও ১২ প্রজাতির মোলাস্কা চিহ্নিত করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সচিব রইছ উল আলম মন্ডল, মহাপরিচালক গোলজার হোসেনসহ বিভিন্ন দফতরের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা: মোহাম্মদ রকিব হোসেন