আশরাফ চৌধুরী রাজু, সিলেট: সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ নেতা বদরুজ্জামান সেলিম অবশেষে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর বাসায় কেন্দ্রীয় এবং সিলেটের স্থানীয় নেতাদের নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সেলিম। সংবাদ সম্মেলনে বদরুজামান সেলিমের মা এবং স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তিনি বলেন- বিএনপি আমার রক্তে, আমার শিরায় উপশিরায়। কালকে যখন আমাকে বাসায় এসে অনুরোধ করেছেন সেটি আমি ফেলতে পারিনি। তাই আমি নির্বাচন থেকে সরে দাড়াচ্ছি।
আসন্ন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী নাগরিক কমিটি থেকে মনোনয়ন প্রদানকারী বদরুজ্জামান সেলিমের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে নগরীর কুমারপাড়ায় আরিফের ব্যক্তিগত অফিসে আয়োজিত এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা আমান উলাহ আমান।তিনি বলেন- নির্বাচনে দলের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ার কারণে বদরুজ্জামান সেলিমকে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণে সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এরই সাথে সাথে এখন এই মুহুর্ত থেকে তিনি আবার দলীয় পদে বহাল হলেন। তিনি আবারও দলের সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক।আমান বলেন- বদরুজ্জামান সেলিম ও আরিফুল হক চৌধুরী দু’জনই বিএনপির জন্য অনেক ত্যাগ করেছেন। আরিফ ও সেলিমরা একদিনে গড়ে ওঠেনি। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নির্দেশে এ বদরুজ্জামান সেলিমকে আবারোও দলীয় পদে বহাল করা হল।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা কলিম উদ্দিন মিলন, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, ডা. শাহরিয়ার হোসেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত সাদেক প্রমুখ।
এর আগে বুধবার দিনগত রাতে সেলিমের বাসায় গিয়েছিলেন বিএনপির একটি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। সেখানে তারা সেলিমের মায়ের সাথে কুশল বিনিময় করেন এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনার একপর্যায়ে নির্বাচন নিয়ে কথা উঠলে সেলিমকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এসময় আরিফুল হক চৌধুরীও সেখানে উপস্থিত হন। তারা বলেন- ‘তুমি দলের লোক, তোমাকে দলে ফিরিয়ে আনতেই আমরা এসেছি।’
তবে সেসময় কোন সিদ্ধান্ত না জানালেও বৃহস্পতিবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন সেলিম।