অভিযানের মধ্যেও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর প্রতারণা থামছে না
ইসমাঈল হুসাইন ইমু: রাজধানীসহ সারাদেশে ভেজালবিরোধী অভিযান চলে আসলেও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর প্রতারণা থামছেনা। ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগ নির্ণয়, চিকিৎসায় মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট, রাসায়নিক দ্রব্য ও বিদেশগামীদের মেডিকেল পরীক্ষার ক্ষেত্রে ভুয়া রিপোর্ট প্রদানসহ বিভিন্ন অনিয়ম করে আসছে এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো।
এমন খবরের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার রাতে র্যাব-৩ এর একটি দল কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালকে ৬ লাখ, রয়েল ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল সেন্টারকে ১ লাখ ৫০ হাজার, ডিজিটাল মেডিকেল সার্ভিস লিমিটেডকে ৭ লাখ, ইসলামী ব্যাংক স্পেশালাইজড অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালকে ১ লাখ ৫০ হাজার, ইফতি ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল সেন্টারকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম এ জরিমানা করেন।
এরআগে গত ২ জুলাই ধানম-ি-২ নম্বর সড়কের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুই বছর আগের মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট (ডায়াগনস্টিক টেস্টে রোগ নির্ণয়ে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান) ব্যবহার এবং ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করায় র্যাবের অভিযানে এই জরিমানা করা হয়। এমনকি রি-এজেন্টে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ পরিবর্তন করে জেলা শহরের বিভিন্ন শাখায়ও পাঠানো হতো। এছাড়া গত ৫ জুলাই আর্বজনা ব্যবস্থাপনা অগোছালো ও পরীক্ষা নিরীক্ষার ল্যাবের ভেতরে ধূলোবালি পাওয়ার কারণে রাজধানীর ধানম-ি ১৫ নম্বরের ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম জানান, প্রতিষ্ঠানটির সব ধরনের মেশিন ও পরীক্ষার ল্যাব ঠিক রয়েছে। কিন্তু ল্যাবের ভেতরে কোনো এক পাশে ধূলোবালি পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির আর্বজনা ব্যবস্থাপনা ভালো না থাকার কারণে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এর আগে গত ৩ জুন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় সাতটি ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করে ক্লিনিকগুলোর জরিমানা ও দুইটি ক্লিনিক সিলগালা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এগুলো ছাড়াও উপজেলাব্যাপী আরো বেশকিছু অবৈধ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
উপজেলা প্রশাসন ও ভুক্তভোগী এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দুটি পৌর সদরসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় প্রায় ২০টির মতো অবৈধ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এগুলোর কোনোটিরও বৈধ লাইসেন্স নেই। সবগুলোই চলছে লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন থাকার কথা প্রচার করে।
গত ১৪ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকিউল ইসলাম ভবানীগঞ্জ পৌর এলাকার সাতটি ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় ও দুটি ক্লিনিক সিলগালা করে দেন।
এসব বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকিউল ইসলাম বলেন, আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগ করা হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতটি চলমান প্রক্রিয়া। পর্যায়ক্রমে সবগুলো ক্লিনিকের কার্যক্রম আমরা খতিয়ে দেখব। অনিয়ম থাকলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তবে অচিরেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পুনরায় চালু হবে।