ইসমাঈল হুসাইন ইমু: রাজধানীতে এবার বাস ভাড়া না দিয়ে উল্টো টাকা হাতানো চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। বাস হেলপারের কাছ থেকে ভাংতির কথা বলে এরা হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা। প্রতিবাদ করে উল্টো বাস চালক ও হেলপার-কন্ডাক্টররা পড়ছেন বিপাকে। একযোগে যাত্রী বেশে একজনের পক্ষে কথা বলায় টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছে হেলপাররা।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা। বাইরে খাঁ খাঁ রোদ। মহাখালী থেকে ৩ নম্বর বাসে ৭/৮ যুবক গুলিস্তানের কথা বলে বাসে চড়েন। শাহবাগ পার হয়ে শিশু পার্কের সামনে পৌঁছলে তাদের মধ্যে একজন হেলপারের উদ্দেশ্যে বলে উঠলেন বাকি টাকা কই ? এর আগে অবশ্য ভাড়া তোলা শেষ হয়ে গেছে। অবাক হয়ে হেলপারের উত্তর বাকি টাকা মানে ! আপনি কত টাকার নোট দিয়েছেন ? উত্তরে ওই যুবক রাগত স্বরে বলে উঠলেন ৫শ টাকার নোট। কিছু বলে উঠার আগেই আশপাশের সিট থেকে যুবক ও তরুণদের একটি দল একযোগে বলে উঠলো তারা দেখেছেন ৫শ টাকার নোট দিতে। পরে বাধ্য হয়ে মহাখালী থেকে গুলিস্তানের ভাড়া রেখে বাকি টাকা ফেরত দেন হেলপার। এছাড়া মিরপুর থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলোর এ প্রতারণা শুরু হয় আগারগাঁও থেকে। তাছাড়া অন্য রুটেও এ ধরনের প্রতারণা শুরু হয়েছে বলে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
গুলিস্তান থেকে উত্তরা রুটের ৩ নম্বর বাসের লাইনম্যান ইমরান হোসেন বলেন, মাসখানেক থেকে এ প্রতারণা শুরু হয়েছে। প্রথমাবস্থায় বাস হেলপারদের সন্দেহ করা হতো। বাস চালকদেরও বেতন কর্তন করা হতো টাকা কম দেয়ার কারণে। পরে দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে এ প্রতারকদের বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বলেন, এরা রাজধানীর কয়েকটি রুটে চলাচল করে থাকে। ৭/৮ জনের একটি দল একেকদিন একে রুটে প্রতারণা করে থাকে। এক রুটে দু’একদিন পর পর চলাচল করে এরা। কয়েকদিন ধরে বাস মালিক ও সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে নজরদারি শুরু করেন। গতকাল গুলিস্তান এলাকায় এ প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে চিহ্নিত করে আটকের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে প্রতারকরা বিষয়টি টের পেয়ে দ্রুত সটকে পড়ে। এর আগে মহাখালী এলাকায়ও এ চক্রের সদস্যদের আটকের চেষ্টা করা হয়েছিল। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে প্রতিদিন বাসে চলাচল করেন সুশান্ত সাহা, তরিকুল ইসলাম, হুমায়ুন কবিরসহ এমন বেশক‘জন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এমন প্রতারণা শুরু হতে পারে। তবে অনেক সময়ই হেলপাররা যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণ করে থাকে। বাসের এক মাথা থেকে শেষ মাথা পর্যন্ত ভাড়া তোলার সময় অনেকেই ৫০, ১শ ও ৫শ টাকার নোট দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে অনেককে ভাড়ার টাকা রেখে বাকি টাকা ফেরত দেয়া হলেও বেশিরভাগ যাত্রীর টাকা ভাংতি নেই, পরে দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়। একপর্যায়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে আসার আগে বাকি টাকা ফেরত চাইলে হেলপারদের সঙ্গে বাক-বিত-া এমনকি হাতাহাতির ঘটনাও রয়েছে।