সংলাপ-সমঝোতা-ঐক্যমতেই সংকটের সমাধান
সরকার ও সবকটি রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা নিয়ে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা তাদের দায়িত্ব। দেশবাসীও এটা চায়। এর ব্যত্যয় হলে নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে না। নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে একটা স্থায়ী সমাধান এখনো না হওয়াটা দুঃখজনক। তবে এই না হওয়ার পেছনেও অনেক কারণ রয়েছে। এ বিষয়ে একটা স্থায়ী সমাধান তো হয়েই গিয়েছিল। ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ আন্দোলন করল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য, তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি। আন্দোলনের মুখে বিএনপি তা মেনে নিতে বাধ্য হলো। দেশবাসীও এই ভেবে খুব খুশি হলো যে, নির্বাচন আর প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারবে না। সেই পদ্ধতি তো ভালোই চলছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হওয়ার পর যে কটি নির্বাচন হয়েছে তা তো মোটামুটিভাবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষই হয়েছে। এই সরকার পদ্ধতি নিয়ে বাদ-প্রতিবাদ কোথাও তেমন হয়নি বললেই চলে। ২০০৮ সালে বিপুল সংখ্যক আসন নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো সংশোধন করে একসময় তাদেরই আন্দোলনের ফসল তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে দিল। এটা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ একটা সংশোধন। প্রশ্ন হচ্ছেÑ কেন সংশোধন করা হয়েছিল সংবিধান? নিশ্চয়ই কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল। এই সংশোধনী মানা যায় না। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সকলকে বসতে হবে। সবকটি দলকে নিয়ে বসুন, আলাপ-আলোচনা করুন, প্রয়োজনে সংবিধান আবারও সংশোধন করুন। সংবিধান সংশোধন তো ওখানেই থেমে থাকতে পারে না। দেশ, জাতি ও রাষ্ট্রের স্বার্থে আলাপ-আলোচনা করুন। দরকার হলে আবার আইন পাস করুন সবার সম্মতি নিয়ে। আমাদের তো এ ধরনের উদাহরণ নিকটঅতীতেও আছে। এখন নির্বাচন নিয়ে যে জিনিসটা হচ্ছেÑ এটা রাজনীতিকে কলুষিত করছে এবং গণতন্ত্রের পথকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য সবাইকে একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে।
পরিচিতি : কলামিস্ট ও সাবেক সচিব/সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে লেখাটি তৈরি।