নিয়ামুল ইসলাম
‘আজ বহু বছর পরে বসুন্ধরা আবাসিক থেকে পায়ে হেঁটে, রিকশায় চড়ে মিরপুর ফিরলাম। বিশ্বাস করেন, একটুও কষ্ট হয়নি আমার। বরং খুব ভালো লেগেছে। ওদের সাথে আন্দোলনে না নামলেও পাশে পাশে হাঁটলাম না হয় কিছুক্ষণ। ছাত্রদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য যে কোন কষ্ট করতে আমরা পারব।’সেই সকাল থেকে ছেলে-মেয়েগুলো পথে নেমেছে। কেন নেমেছে? ওদের দুজন বন্ধুকে গত পরশু রবিবার বাসচাপা দিয়ে খুন করেছে একজন ড্রাইভার। আরও কয়েকজন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। বিক্ষুব্ধ ছেলেমেয়েগুলো পথে নেমেছে এর বিচার দাবিতে। বিচার? সে তো নিভৃতে কাঁদে প্রতিটি সড়ক দুর্ঘটনার পর! ওদের এই আবেগ আমাদের ছুঁয়ে যায়। ওরা সহপাঠী হত্যার বিচার দাবি করছে। তাদেরকে কেন পুলিশের লাঠিচার্জ করে রক্তাক্ত করতে হবে? কেন তাদেরকে আহত করতে হবে? তাদের কী অপরাধ? কলেজের ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে ওরা। কার কাছে চাইবে বিচার? কে ওদের কথা শুনবে? এদেশে তো কোনো বিচার হয় না! এখন পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনার দায়ে কোনো চালকের তো বিচার হয়নি। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ এসেছে বহুবার। এখন পর্যন্ত তো একটি ঘটনার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি! মিডিয়ার সামনে তাই ওদের এমন অনুরোধ,অন্তত তাদের কান্নার গল্পগুলো যেন ছাপানো হয়।কি-বোর্ডে লেখাগুলো টাইপ করতে করতে কখনও চোখের কোনায় জমা হয় অশ্রু। এদেশের প্রতিটি মানুষ চায় নিরাপদ সড়ক। এদেশের প্রতিটি মানুষ চায়, যে আমাদের বহন করা গাড়ির ড্রাইভারটি যাতে নেশাখোর না হয়। কোনো দুর্ঘটনা ঘটালে চালকদের যেন বিচার হয়।দুর্ভাগ্য, এদেশে একের পর এক মানুষ খুন করে চলা নেশাগ্রস্ত চালকদের পাশে দাঁড়ানোর মানুষ আছে; কিন্তু সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই!
পরিচিতি: শিক্ষার্থী, সরকারি বাংলা কলেজ/মতামত গ্রহণ: ফাহিম আহমাদ বিজয়/সম্পাদনা: তাওসিফ মাইমুন