ড. অনুপম সেন
তিনটি সিটি নির্বাচন নিয়ে অনেকগুলো পত্রিকায় জরিপ হয়ে ছিলো। আমি সেই জরিপগুলো দেখেছি। তাতে ছিলো যে, রাজশাহী এবং বরিশালে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়েছে। কেননা, তাদের জন সমর্থন অনেক বেশি। আর সিলেটে নির্বাচনী মাঠে তুমুল লড়াই হয়েছে। নির্বাচনী জরিপের ফলাফলে আমারা তা দেখেছি। যথারীতি সিলেটে তুমুল লড়াই হয়েছে এবং বিএনপির প্রার্থী জয়ী হয়েছে। অত্যন্ত স্বাভাবিক নির্বাচন হয়েছে তা আমরা দেখেছি। যে দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে তার কোনো ভিত্তি নেই। এমনকি আমেরিকা এবং যুক্তরাজ্যেও ছোট খাটো ঘটনা ঘটে। আমি বহু বছর উত্তর আমেরিকায় ছিলাম এবং খুব কাছ থেকে তাদের নির্বাচন দেখেছি। শেখ হাসিনা পরিস্কারভাবে বলেছেন, দেশে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। তিনি আরো বলেছেন, জনগণ আমাদেরকে দেশ পরিচালনার জন্য সমর্থন দিলে থাকবো। অর্থাৎ তারা আমাদের দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত ধরে রাখার জন্য ভোটে জিতালে আমরা দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবো। অথবা আমাদেরকে সমর্থন না দিলে আমরা ক্ষমতা ছেড়ে দিবো। আমরা দশ বছর দেশের উন্নয়ন করেছি এটিই আমাদের অনেক বড় অর্জন। নির্বাচন নিয়ে বার বার অর্থহীন কথা বলে যাচ্ছে বিএনপি। বাংলাদেশে ২২ লক্ষ মামলা রয়েছে তা ১৯৬০ এর থেকে মামলা। ১০ বছরে এতো মামলা করা অসম্ভব। এতো মিথ্যা কথা বলা হয়, ১৭ লক্ষ লোককে জেলে ভরে রেখেছে। এতো লোক কারাগারে রাখার মত বাংলাদেশের অবস্থা নেই। বিশ্বের বহু দেশ আছে যাদের ১৭ লক্ষ জনগণ সেই দেশে বসবাস করে। এভাবে টেলিভিশনে অনর্গল মিথ্যাচার ছড়ানো হচ্ছে। তারা আরো বলছে, দেশে গণতন্ত্র নাই, তাদের এমন কথায় অবাক হতে হয়। আমি ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানিতে ঘুরেছি। তাদের দেশে অধিক মিথ্যাচার ছড়ালে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কতৃক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এর কোনো রকমের ব্যবস্থা নেওয় হয় না। আমাদের দেশে কাউকে গ্রেপ্তার করা হলে ২০/২৫ দিনের মধ্যে বেল দেওয়া হয়। কিন্তু খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে উনার সম্মানার্থে উনাকে লৌহ আইনে উনার ৫ বছরের সাজা দিয়েছে আদালত। খালেদা জিয়ার বয়স বিবেচনা করে তার সম্মানার্থে জেলের কক্ষে এসি, টিভি, বিদ্যুৎ এবং জেলের নিয়ম ভেঙ্গে তার সাথে একজন সেবিকা দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়াকে পত্রিকা দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং, তাকেতো যথেষ্ঠ সম্মান দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে বর্তামানে তিনি বিরোধী দলের নেত্রী নন। কারণ, পার্লামেন্টে বিরোধী দলের নেত্রী রওশন এরশাদ। খালেদা জিয়াতো নির্বাচনই করেননি। তারপরেও তাকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও বিএনপির বলিষ্ঠ রাজনীতিবিদরা বলিষ্ঠভাবে মিথ্যা ছড়াচ্ছেন। তা দেখে খুবই দুঃখ লাগে। কারণ, তারা যদি সত্যিকারার্থে গণতন্ত্রের পরিবেশ রক্ষা করতে চান, তাহলে গণতন্ত্রকে চর্চা করতে হবে। তাদের কথায় অন্তত কিছু সত্যতা থাকতে হবে।
পরিচিতি : উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য, আওয়ামী লীগ/ মতামত গ্রহণ : তাওসিফ মাইমুন/ সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ