স্বপ্না চক্রবর্তী: বাংলাদেশে জ্ঞানভিত্তিক শিল্পায়নের ধারা জোরদারে চীনের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন চীনা রাষ্ট্রদূত ঝাং জু। তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাসায়নিক সার, স্টিল, কেমিক্যাল, আইসিটি, চিনি, কাগজসহ মানুফ্যাকচারিং শিল্পখাতে চীনের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহী। ইতোমধ্যে চীনের একটি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের স্টীল সেক্টরে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ঝাং জু শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সাথে বৈঠককালে এ কথা জানান। শিল্প মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ এনামুল হক, বিসিকের চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহঃ ইফতিখার, বিসিআইসির চেয়ারম্যান শাহ মোঃ আমিনুল হকসহ শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এসময় দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি বাংলাদেশের শিল্পখাতে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধি, প্রযুক্তি স্থানান্তর, চীনের অত্যাধুনিক কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বলেন তারা।
বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চীন সফরের মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে অর্থবহ দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সম্পর্কের সূচনা হয়। এর ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর এবং চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিংপিং এর বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে এ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৭টি মৈত্রী সেতু নির্মাণ দু’দেশের মধ্যে বিরাজমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, বাংলাদেশের শিল্পখাতের উন্নয়নে চীনা উদ্যোক্তারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এ বিবেচনায় বর্তমান সরকার চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য চট্টগ্রামে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। এতে চীনের উদ্যোক্তারা পরিবেশবান্ধব ও উচ্চ প্রযুক্তির শিল্পস্থাপনে এগিয়ে আসতে পারে। তিনি চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাস্তবায়িত শাহ্জালাল ফার্টিলাইজার প্রকল্পের খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহ এবং সাভার চামড়া শিল্পনগরীর কেন্দ্রিয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে চীনা রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশকে চীন সব সময় ভাল প্রতিবেশি ও বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। শিল্পখাতে উন্নয়নের চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন এবং দু’দেশের উদ্যোক্তাদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, সংলাপ ও নীতি সহায়তা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। চীনের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার গৃহিত উন্নয়ন কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশের শিল্পখাতের আধুনিকায়ন, জনবলের কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি এবং এসএমইখাতের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন। সম্পাদনা: মোহাম্মদ রকিব হোসেন