ফয়সাল মেহেদী: ভোক্তা ঠকানোর অপরাধে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে ১ হাজার ৩৭৪টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এসময় প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ১ কোটি ২১ লাখ ৭৫ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ কোটি ১৮ লাখ ৮২ হাজার ৯৭৫ টাকা জমা করা হয়েছে সরকারী কোষাগারে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ভেজাল পণ্য তৈরি, পচা-বাসি বা মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি, ওজন ও পরিমাপে কারচুপি, নির্ধারিত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রিসহ সংগঠিত ভোক্তা বিরোধী বিভিন্ন অপরাধে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত মোট ৪৬৮টি বাজার অভিযান পরিচালনা ও ২৪৫টি লিখিত অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে ১ কোটি ২১ লাখ ৭৫ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ হিসাবে ১১৫ জন অভিযোগকারীকে ২ লাখ ৯২ হাজার ৬২৫ টাকা প্রদান করা হয়েছে। বাকী টাকা সরকারী কোষাগারে জমা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম লস্কর আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, প্রচার-প্রচারণা ও ভোক্তাদের সচেতনতার কারণে জরিমানা আদায় বাড়ছে। অভিযোগ যত বেশি আসবে এবং বাজার অভিযান যত বাড়বে ততই জরিমানা আদায় হবে। একই সঙ্গে সরকারের আয়ও বাড়বে। তিনি বলেন, অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যপারে আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই।
এর আগে সদ্য বিদায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৩ হাজার ৬০২টি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১৩ কোটি ৯৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১০ হাজার ৭২৯টি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৯ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছিল। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে জরিমানা আদায় বাড়ে ২.০৪গুণ বা ৭ কোটি ১২ লাখ ৭৬ হাজার ৪০০ টাকা। শতকরা হিসাবে যা ১০৩.৭৪ শতাংশ।
আদায় করা ওই জরিমানার মধ্যে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫০ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১০২.৬০ শতাংশ বা ৬ কোটি ৮৯ রাখ ১ হাজার ৩২৭ টাকা বেশি। আর ২৫ শতাংশ হিসাবে বাকী ৩৯ লাখ ২৬ হাজার ৭৫০ টাকা পেয়েছেন ১ হাজার ৯৫২ জন অভিযোগকারী ভোক্তা। এর আগের বছর ১ হাজার ৪১৬ জন ভোক্তা ১৫ লাখ ৫১ হাজার ৬৭৭ টাকা পেয়েছিলেন। সেই হিসাবে অভিযোগের ভিত্তিতে ভোক্তাদের প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ বেড়েছে আড়াই গুণেরও বেশি।
অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আগের বছরের তুলনায় প্রায় দেড়গুণ বেড়েছে ভোক্তাদের অভিযোগ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সংস্থাটিতে মোট ৯ হাজার ১৯টি লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। এর আগের অর্থবছরে ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ আসে ৬ হাজার ১৪০টি। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের তুলনায় সর্বশেষ সমাপ্ত অর্থবছরে ভোক্তাদের অভিযোগ বেড়েছে ১.৪৭ গুণ বা ২ হাজার ৮৭৯টি। সম্পাদনা: শোভন দত্ত