অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগে কাজ করতে অনাগ্রহী ৪০ শতাংশ ব্যাংকার
আদম মালেক: ব্যাংকিং খাতে কর্মরত কর্মীদের ৪০ শতাংশই অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগে কাজ করতে চায় না। নিরীক্ষা বিভাগে কাজ করতে তাদের আগ্রহ খুবই কম। এজন্য নিরীক্ষা বিভাগে জনবল সংকট প্রকট।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘ইন্টারন্যাল অডিট অ্যান্ড পারফরমেন্স অব ব্যাংকস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালায় উপস্থাপতি এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রাজী হাসান।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ,বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির চেয়ারম্যান ড. সামসুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অনুষদ সদস্য এবং বেসিক ব্যাংকের সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.আব্দুল কাইয়ুম মোহাম্মদ কিবরিয়া।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অনাগ্রহী ব্যাংকাররা মনে করেন, নিরীক্ষা বিভাগে কাজ করলে তুলনামূলক সময় দিতে হবে বেশি। ফলে পরিবারের সদস্যদের সাথে বেশি সময় দেওয়া সম্ভব হবে না। অন্যদিকে মাত্র ১৯ শতাংশের প্রথম পছন্দ নিরীক্ষা বিভাগ। আগ্রহী ব্যাংকাররা মনে করেন, শাখা পর্যায়ে কাজ করলে টার্গেট পূরণের অস্বাভাবিক চাপ থাকে। এজন্য অভ্যন্তরিণ নিরীক্ষা বিভাগে কাজ করলে চাপমুক্ত থাকা যায়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ব্যাংকের অভ্যন্তরিণ নিরীক্ষা ও কমপ্ল্যায়েন্স বিভাগে (আইসিসিডি) জনবল সংকট প্রকট। এ কারণে এ বিভাগের কর্মীদের ওপর চাপ বেশি থাকে। মোট কর্মীর মাত্র ১ দশমিক ৫২ শতাংশ আইসিসিডি বিভাগে কর্মরত। একজন কর্মীর ওপর চারটির বেশি শাখা নিরীক্ষার দায়িত্ব থাকে। আর ২২টির মতো শাখার দায়িত্ব থাকে একটি অডিট টিমের ওপর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রাজী হাসান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আইসিসিডি’র জন্য আলাদা গাইডলাইন তৈরি করে দিয়েছে। অভ্যন্তরিণ নিরীক্ষা সঠিকভাবে হলে জনগণের আমানতের অর্থ সুরক্ষিত থাকবে। তিনি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সততা এবং নৈতিকতার সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকগুলোর নিরীক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। এতে ব্যাংকে ঋণ সংক্রান্ত ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসবে।
পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকের অভ্যন্তরিণ নিরীক্ষা আরও শক্তিশালী করতে হবে। একই সঙ্গে দক্ষ জনবল নিয়োগ করতে হবে। এ বিভাগের কর্মীদের আইটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।